বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে আবার উঠল বাংলাদেশের পতাকা। পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের চূড়া জয় করেছেন চট্টগ্রামের বাবর আলী। ১১ বছর প্রতীক্ষার পর আজ তৃতীয় মেরুতে উড়েছে লাল-সবুজ!!
রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।
এর আগে চার বাংলাদেশি এভারেস্ট জয় করলেও চট্টগ্রাম থেকে বাবরই প্রথম। তাই চট্টগ্রামবাসী তার এই বিজয়ে উদ্বেলিত। তবে সেই চারজনের চেয়ে বাবর আলীর লক্ষ্য আলাদা। জানা গেছে, বাবরের লক্ষ্য পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসে। রোববার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারও শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা। সব অনুকূলে থাকলে ভোরে পৌঁছতে পারেন এর চূড়ায়। এ লোৎসেতে এর আগে কোনো বাংলাদেশি সামিট করেননি। কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দুটি আট হাজারি শৃঙ্গেও চড়েননি। তাই লক্ষ্য পূরণে হলে বাবার আলী নতুন রেকর্ড গড়বেন।
৩৩ বছর বয়সী বাবর আলীর বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুডিশ্চর গ্রামে। পেশায় তিনি চিকিৎসক। এমবিবিএস ডিগ্রি নেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে। ওই মেডিকেলের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
এরপর কিছুদিন চিকিৎসক হিসাবে কাজ করলেও পর্বতজয়ের নেশা তাকে সেই পেশায় স্থির থাকতে দেয়নি। সেই সঙ্গে সাইক্লিংয়ের নেশায়ও মাতেন বাবর।
ফেইসবুকে তিনি নিজের পরিচয় দেন এভাবে- ‘পেশায় ডাক্তার, নেশায় পাহাড়ি’।
ট্রেকিংয়ে বাবরের হাতেখড়ি ২০১০ সালে, তখন তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়গুলোতে ট্রেকিং করতেন। চট্টগ্রামের পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমারসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। এই ক্লাবের হয়ে ২০১৪ সাল থেকে হিমালয়ের নানা শিখরে চালান অভিযান।
২০১৭ সালে ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের উত্তরকাশী শহরের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন বাবর। ২০২২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২২ হাজার ৩৪৯ ফুট উচ্চতার হিমালয়ের অন্যতম দুর্গম ও টেকনিক্যাল চূড়া আমা দাবলাম আরোহণ করেন তিনি।
এভারেস্ট জয়ের আগে বেশ কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন বাবর। তার মধ্যে রয়েছে সারগো রি (৪ হাজার ৯৮৪ মিটার), সুরিয়া পিক (৫ হাজার ১৪৫ মি.), মাউন্ট ইয়ানাম (৬ হাজার ১১৬ মি.), মাউন্ট ফাবরাং (৬ হাজার ১৭২ মি.), মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা (৬ হাজার ৩০৩ মি.), মাউন্ট শিবা (৬ হাজার ১৪২ মি.), মাউন্ট রামজাক (৬ হাজার ৩১৮ মি.), মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১২ মি.) ও চুলু ইস্ট (৬ হাজার ০৫৯ মি.)।