মাথার তালুর সামনের অংশে চুল কমে কপাল বড় হয়ে যাওয়ার মতো বিষয় প্রায় সবার মাঝেই দেখা যায়। তারমানে এই নয় ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে।
বরং এর মানে হল মাথার সামনের অংশের চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে। আর সমস্যাটা তখনই চোখে পড়ে যখন বেশি মাত্রায় কপালের ওপরের অংশের চুল খালি হয়ে যায়।
এই সমস্যা সাধারণত পুরুষের মাঝে বেশি দেখা গেলেও নারীদেরও হয়।
নির্দিষ্ট নিয়মে চুল পড়া
‘অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেসিয়া’- বা যাকে বলা হয় ‘প্যাটার্ন হেয়ার লস’- এই ধরনের চুল পড়ার কারণে কপাল বড় হতে থাকে। বয়স বৃদ্ধির সাথে পুরুষদের এরকম হয়। তবে নারীদের মাঝে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার অন্যতম কারণে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের কেশ পরিচর্যার প্রতিষ্ঠান ‘বজলিএমডি’র চুল ও তালু বিষয়ক বিশেষজ্ঞ গ্রেচেন ফ্রিইজ বলেন, “বয়সের সাথে চুল কমার একটা ধরন রয়েছে। যা কিনা পুরুষদের জন্য প্রযোজ্য। যেমন- মাথার মাঝে টাক হওয়া, উপরের অংশ খালি হয়ে মাথার চারপাশে চুল থাকা- ইত্যাদি। আর নারীদের ক্ষেত্রে চুল কমে মাথার সামনে বিস্তৃত অংশ জুড়ে।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন’ বা ‘ডিএইটি হরমোনের কারণে এই ধরনের চুল পড়া দেখা দেয়। যদি চুলের ফলিকলস সুপ্ত অবস্থায় থাকে আর মরে না যায় তবে কিছু পন্থায় এই সমস্যা সমাধান করা যায়।”
চিকিৎসা: “মিনোক্সিডিল’ দিয়ে তৈরি পণ্য সঠিক উপায়ে ব্যবহারের মাধ্যমে এই সমস্যা কমানো যায়”- বলেন, ডা. ফ্রিইজ।
শিরা উপশিরা বিস্তৃত করার মাধ্যমে মিনোক্সিডিল রক্ত প্রবাহের মাত্রা বাড়িয়ে চুলের ফলিকল উদ্দিপ্ত করতে পারে। ফলে চুল গজানোতে সহায়ক হয়। আর সমস্যা চোখের পড়া মাত্রই ব্যবহার করা শুরু করতে হবে।
কারণ ফলিকলগুলো সুপ্ত অবস্থায় থাকার সময় এই উপাদান কাজ করে। আর নিয়মিতভাবে ব্যবহার করে যেতে হয়। বন্ধ করলেই চুল পড়া শুরু হয়।
ট্র্যাকশন অ্যালোপেসিয়া
এই সমস্যা হয় যখন টেনে বা শক্ত করে বেঁধে চুলের স্টাইল করা হয়। যেমন- টেনে বেণী করা, খোঁপা বাঁধা বা পনিটেইল করা।
“কপাল থেকে টেনে এভাবে চুল বাঁধার কারণে ‘হেয়ার লাইন’ ফাঁকা হতে থাকে”- একই প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করেন চুল ও তালু বিষয়ক আরেক মার্কিন বিশেষজ্ঞ ডা. জিনা ওয়াশিংটন।
প্রতিনিয়ত এভাবে টেনে চুল বাঁধলে ফলিকলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। যে কারণে চুল পড়া শুরু হয়। আর প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নিলে চুল পড়ার বিষয়টা স্থায়ী হয়ে যায়।
চিকিৎসা: প্রথম কথা হল, টেনে চুল বাঁধা বন্ধ করতে হবে।
ওয়াশিংটন বলেন, “পনিটেইল, বেণী, খোঁপা- চুলের যে কোনো স্টাইল করতে হবে ঢিল ভাবে। শুক্ত করে বাঁধা যাবে না। এছাড়া চুল টানা, তাপ প্রয়োগ বা রাসায়নিক পণ্য ব্যবহার এড়াতে হবে।”
এগুলো করলে চুল আবার গজাবে, ফলিকলগুলো ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে।
ওয়াশিংটন পরামর্শ দেন, “তালু মালিশের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায় যা চুল গজানোতে ভূমিকা রাখে।”
এছাড়া চুল গজানোর প্রসাধনী ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই যে কোনো পণ্য ব্যবহার করতে হবে।