Top Newsজাতীয়

মাংসের টুকরোগুলো এমপি আনারেরই, ধারণা হারুনের

মোহনা অনলাইন

কলকাতায় সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরোগুলো এমপি আনারেরই হবে বলে মনে করছে ডিবি পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসার পর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, আলামত উদ্ধার, পারিপার্শ্বিক ডিজিটাল তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করায় আনার হত্যার তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পেলেই তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।\

হারুন অর রশীদ বলেন, আনোয়ারুল আজীম আনারকে গত ১৩ মে কলকাতার মাটিতে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশে একটি মামলা রুজু হয়েছে। একই ঘটনায় কলকাতায়ও একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে তিনজন ঘাতক গ্রেপ্তার রয়েছেন। এর মধ্যে মূল ঘাতক আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে আর হত্যাটি সংগঠিত হয়েছে কলকাতায়। মামলাটির তদন্তের জন্য আমরা কলকাতায় গিয়েছিলাম। আমাদের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা এবং ঘটনাস্থলের এভিডেন্সগুলো দেখতে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, “আমরা গ্রেফতার আসামিদের তথ্য ক্রস এক্সামিনেশন করেছি। এছাড়া কলকাতায় গ্রেফতার আসামির তথ্য যাচাই-বাছাই করেছি। কলকাতার সিআইডিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি।”

“আমরা কলকাতা পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম সুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাংক দেখার জন্য। আমরা মনে করি, সেখান থেকে কিন্তু ভিকটিমের মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়েছে’, যোগ করেন হারুন।

উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরোগুলোর ডিএনএ টেস্ট কখন হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, কলকাতা পুলিশ এটা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে হবে বলে আমাদের জানিয়েছে।

কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া বাকি আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা গেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিয়াম নামে এক অভিযুক্ত বর্তমানে নেপালের কাঠমান্ডুতে অবস্থান করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই বিষয়ে নেপাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরাও কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে আনঅফিসিয়ালি যোগাযোগ রাখছি। আর এই ঘটনার মূল মদদদাতা শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। তিনি সেই দেশের নাগরিক।

ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বলেছি। আমাদের আইজিপিও বিষয়টি ইন্টারপোলকে জানিয়েছেন। এছাড়া আমরাও আন-অফিশিয়ালি বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাছে সহযোগিতা চাইবো।

হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে কিছু জানা গেছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে তো অবশ্যই একটি মোটিভ রয়েছে। রাজধানীর গুলশান থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় দুই মাস ধরে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর আগে দুইবার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এমপি আনারকে হত্যা করার জন্য। বাংলাদেশে হত্যা করলে হত্যাকারীদের সমস্যা হবে, তাই তারা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনকে বেচে নেয়। তারা এমনভাবে পরিকল্পনা করলো যাতে করে তাকে হত্যার পর তার মরদেহ না পাওয়া যায়। অভিযুক্তদের চেষ্টা ছিল বাংলাদেশি এবং ভারতীয় তদন্তকারীদেরকে বিভ্রান্ত করার। তারপরও এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও কোনো মোটিভ রয়েছে কি না তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।

এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বড় কোনো স্বর্ণ ব্যবসায়ী জড়িত আছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, আমরাও বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। এসব তথ্য আমরা যাচাই-বাছাই করেছি। যেহেতু মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে সেহেতু আমরা এখন স্পেসিফিক করে কিছু বলছি না।

উদ্ধার হওয়া টুকরো বাদে এমপি আনারের দেহের বাকি অংশ উদ্ধার করা কঠিন হয়ে যাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী তার দেহের বাকি অংশ পাওয়া যেতে পারে। আমাদের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া একজন আসামি জানিয়েছে, সে রাতের বেলায় ঘন ঘন বাথরুমের ফ্লাশের শব্দ পেয়েছে। তখন আমাদের মনে হয়েছে মরদের টুকরোগুলো ফ্লাশ করা হয়েছে। এই ধারণা থেকে আমরা কলকাতা পুলিশকে বিষয়টি জানাই।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button