কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মিত সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের দুটি ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটের (এফএসআরইউ) একটি ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টার্মিনালটি থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হত। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে দেশে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিতে পারে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে বন্ধ হয়ে যাওয়া টার্মিনালটির মালিকানায় রয়েছে সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে গ্যাসের চাপ কমে গেছে। পেট্রোবাংলা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সামিটের জেনারেল ম্যানেজার (পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া) মোহসেনা হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় কক্সবাজারের মহেশখালীতে একটি ভাসমান পন্টুন সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোং লিমিটেডের (এসএলএনজি) ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) আঘাত করে। এতে এফএসআরইউর ব্যালাস্ট ওয়াটার ট্যাঙ্কের ক্ষতি হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রোটোকল অনুযায়ী, ঘটনার পরপরই সামিটের একজন বিশেষজ্ঞ সার্ভেয়ার ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। সার্ভেয়ারের পরিস্থিতির সম্পূর্ণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সামিট রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) এবং পেট্রোবাংলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করছে। এলএনজি পরিচালনার সংবেদনশীল এবং বিস্ফোরক প্রকৃতি এবং জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে এফএসআরইউর জাতীয় গুরুত্বের কারণে সামিট স্বাভাবিক কার্যক্রম ফের শুরু করার আগে বিষয়টি সংশোধনে সম্পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
জানা গেছে, সামিটের সার্ভেয়ার ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ভাসমান টার্মিনালটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, সরকারের লোকজনসহ সংশ্লিষ্টরা সরেজমিন পরিদর্শন করে যে প্রতিবেদন দেবে, তার ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে কবে নাগাদ এ টার্মিনাল ঠিক হবে, সে ব্যাপারে কোনো পক্ষই কিছু বলতে পারছে না।
রেমাল আঘাত হানার আগে দেশের জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ ছিল দৈনিক প্রায় ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ)। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এলএনজি টার্মিনালটি থেকে ৭০০ এমএমসিএফে নামিয়ে আনা হয় গ্যাস সরবরাহ, যা ঝড়ের দিন জানায় পেট্রোবাংলা। তবে গতকাল গ্যাস সরবরাহ ছিল ২ হাজার ৭৩০ এমএমসিএফ। এর মধ্যে ৭৬৯ এমএমসিএফ এলএনজি।
পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সামিটের টার্মিনালের একটি এফএসআরইউ দিয়ে গ্যাস সরবরাহ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকিটি দিয়ে বর্তমানে দৈনিক ৫০০-৬০০ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। টার্মিনাল সংস্কারে বিদেশ থেকে কারিগরি টিম এসেছে। সংস্কার শেষে দ্রুতই অপারেশনে নিয়ে আসা হবে।’