দর্শকদের অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে। আজ শুক্রবার ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার-২০২৩’-এর মূল অনুষ্ঠান টেলিভিশন ও ডিজিটাল মাধ্যমে দেখতে পাবেন দর্শকেরা। অনুষ্ঠানটি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত হবে।
টেলিভিশনের পাশাপাশি রাত ৯টায় মেরিল-প্রথম আলো, মেরিল, প্রথম আলো, প্রথম আলো এন্টারটেইনমেন্ট ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলেও অনুষ্ঠানটি উপভোগ করা যাবে।
গত ২৪ মে শুক্রবার ঢাকার ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারের ‘দ্য গ্রেস’ মিলনায়তনে বসেছিল মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের ২৫তম আসর। এ বছর পুরস্কারটির রজতজয়ন্তী।
প্রতিবছরের মতো এবারও জমকালো আয়োজনে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের আয়োজন ছিল। এ আয়োজনে আলো ছড়িয়েছেন চলচ্চিত্র, টিভিনাটক ও সংগীত অঙ্গনের তারকারা। পুরস্কারের মঞ্চে কিংবা মঞ্চের বাইরে তারকাদের মধ্যে মজার কোন ঘটনা ঘটেছিল, তা জানতে মুখিয়ে থাকেন দর্শকেরা।
অনুষ্ঠানের কান্ডারি ছিলেন নন্দিত উপস্থাপক হানিফ সংকেত। প্রায় দুই দশক পর মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের উপস্থাপনায় দেখা গেছে তাঁকে। প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি জমিয়ে তুলেছেন তিনি। উপস্থাপনার পাশাপাশি পুরো আয়োজনের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছেন হানিফ সংকেত।
উপস্থাপকের সহযোগী হিসেবে ছিলেন নাজনীন নাহার নিহা ও নীলাঞ্জনা রহমান।
প্রতিবারের মতো এবারের আয়োজনেও আজীবন সম্মাননা, সমালোচক ও তারকা জরিপ পুরস্কার দেওয়া হয়। দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে অবদান রাখার জন্য অভিনয়শিল্পী মাসুদ আলী খানকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিল্পী রফিকুন নবী।
বছর উপস্থাপনায় বিশেষ পুরস্কার, আজীবন সম্মাননা, তারকা জরিপ, নবাগত ও সমালোচনা মিলিয়ে বিভিন্ন বিভাগে মোট ২২টি পুরস্কার দেওয়া হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্বনামখ্যাত ব্যক্তিত্বরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।
এসময় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান জানান, হানিফ সংকেত তাঁর জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র জন্য টানা আটবার মেরিল-প্রথম আলো সেরা উপস্থাপকের পুরস্কার পেয়েছিলেন। তারপর তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন এই বিভাগের সেরা পুরস্কার তিনি আর নেবেন না। তার পর থেকে সেরা উপস্থাপকের পুরস্কারের বিভাগটাও বাদ দেওয়া হয়। হানিফ সংকেত মেরিল-প্রথম আলোর পুরস্কার অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশিবার উপস্থাপনা করেছেন। এবার তাঁকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হবে। এ সময় মঞ্চে আসেন হানিফ সংকেত। মতিউর রহমান ও অঞ্জন চৌধুরী তাঁর হাতে বিশেষ পুরস্কার তুলে দেন।
এরপর বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে আয়োজনটি গান আর গানে ভরপুর ছিল। এসব পরিবেশনা মিলনায়তনভর্তি দর্শকেরা প্রাণভরে উপভোগ করেছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘পেপারবিষয়ক গান’ পরিবেশন করেন রাজীব, হানিফ সংকেতের সুরে গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। এরপর ‘ভিউ শিল্পীদের প্রতিবাদ মিছিল’ শীর্ষক পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন চঞ্চল চৌধুরী, মাজনুন মিজান ও জামিল হোসেন। বাউল গান পরিবেশন করেছেন চিশতি বাউল, পান্থ কানাই, সুকুমার বাউল, অনিমেষ রায়, শফি মণ্ডল ও ফজলুর রহমান বাবু।
‘সাংবাদিক পর্ব’ শীর্ষক পরিবেশনায় ছিলেন পরীমনি, আফরান নিশোসহ আরও অনেকে। হানিফ সংকেতের লেখা ‘বাতাস কর’ প্যারোডি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রাজীব, পুলক অধিকারী ও অয়ন চাকলাদার। এতে নাচ পরিবেশন করেছেন তৌসিফ মাহবুব, শরীফুল রাজ ও জিয়াউল রোশান।
সম্প্রীতিবিষয়ক গানে কণ্ঠ দেন সৈয়দ আব্দুল হাদী। সমবেত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে ছিলেন সাব্বির জামান, কিশোর দাস, অপু আমান, ইমরান মাহমুদুল, অয়ন চাকলাদার, মালিহা তাবাসসুম খেয়া, জিনিয়া আফরিন লুইপা, সিঁথি সাহা, অবন্তী সিঁথি ও আতিয়া আনিসা। মোহাম্মদ রফিক উজজামানের লেখা গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন ইমরান মাহমুদুল।
‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানের তালে নাচ পরিবেশন করেছেন নৃত্যজুটি শিবলী মহম্মদ ও শামীম আরা নীপা। গানটি গেয়েছেন রাজীব। ‘ভাওয়াইয়া, পাহাড়ি, কত্থক ও দেশের গানের মেডল’ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন অঙ্কন ইয়াসমিন, মালিহা তাবাসসুম খেয়া ও আতিয়া আনিসা। নাচ পরিবেশন করেছেন তাসনিয়া ফারিণ, মেহজাবীন চৌধুরী ও সাবিলা নূর।
এসব পরিবেশনা শেষে মুহুর্মুহু করতালিতে শিল্পীদের অভিবাদন জানিয়েছেন দর্শকেরা।