অর্থনীতিবাজেট ২০২৪-২৫

সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু

জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টার পর জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিজের প্রথম বাজেট উত্থাপন শুরু করেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবারের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি ৫৩তম বাজেট, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষে ২১তম বাজেট।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে সরকার ব্যয় বাড়াতে চায় আগের বছরের (২০২৩-২৪) চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।

রেওয়াজ অনুযায়ী এদিন অর্থমন্ত্রী ব্রিফকেস নিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন। প্রতিবারের ন্যায় এবারও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে অর্থমন্ত্রীকে ব্রিফকেস সরবরাহ করা হয়েছে। আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাজেট ডকুমেন্টস নিয়ে সংসদ অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন।

এদিকে বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে, জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে নতুন অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত বাজেটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সম্মতিসূচক সই করেছেন। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন। পরে স্পিকারের অনুমতি সাপেক্ষে অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন।

এবারের বাজেটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। সঙ্গে থাকছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নয়ন ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ।

জানা গেছে, বিশাল অঙ্কের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নের জন্য মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বহির্ভূত খাত থেকে আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে সুদ পরিশোধে, ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা। ভর্তুকি ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন ও পেনশন ১ লাখ কোটি টাকা।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, রাজস্ব আদায় হলেও বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকবে নতুন বাজেটে। ঘাটতি মেটাতে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের পরিকল্পনা থাকছে। যা জিডিপির ৪.৬ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক থেকে নিতে চায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে চায় ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বাজেটে অর্থের জোগান দিতে সরকারকে এখন আগের চেয়ে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। ফলে বাড়ছে ঋণ পরিশোধের চাপ। পাশাপাশি ডলার-সংকট ও ডলারের বাড়তি দাম সরকারকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আরও বেশি চাপে ফেলেছে। আগামী অর্থবছরের জন্য সুদ পরিশোধে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button