ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি হলেও এই ঈদ যেন আনন্দের বার্তা নিয়ে আসছে না ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজা অঞ্চলে। আরবি চান্দ্র বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী আজ শনিবার মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা।
বিশ্বের প্রতিটি মুসলিমের কাছে ঈদ সবচেয়ে আনন্দের দিন। ফিলিস্তিনেও আজ ঈদ; তবে এই ঈদের সময়ও গাজা উপত্যকায় অভিযানে কোনো বিরতি দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির মাধ্যমে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছিল গত সোমবার। এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
কিন্তু এরপর আরও কদিন পেরিয়ে গেলেও কার্যকর হয়নি যুদ্ধবিরতি। গতকাল শনিবার গাজার প্রধান শহর গাজা সিটিসহ উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, রোববার গাজা সিটির তিনটি পৃথক বাড়ি থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন তারা। এরা সবাই ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই দিন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফা এবং গাজার সিটির শরণার্থী শিবিরেও আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।
গাজা উপত্যকা যুদ্ধের আগেও দরিদ্র এবং বিচ্ছিন্ন ছিল। কিন্তু সেখানকার মানুষেরা তখনো তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করত, পশু জবাই করত। এখন গাজার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপ, অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত। গাজার অধিকাংশ কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি বিধিনিষেধ এবং চলমান যুদ্ধের কারণে সেখানকার মানুষ মানবিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। অনাহারে-অর্ধাহারে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে তাদের। এদিকে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৮০ হাজার ফিলিস্তিনিদের কাজের অনুমতিপত্র বন্ধ করে দিয়েছে। গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরু আগে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলে কাজ করত, যা ফিলিস্তিনি অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস ছিল।
গতকাল শনিবারও গাজা শহরের তিনটি বাড়িতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে ঈদের আগে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব কার্যকর হওয়ার আশা দেখছেন না আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষকরা। এই ঈদ যেন গাজাবাসীদের সবকিছু হারানোর শোককেই আবার জাগিয়ে তুলবে!