সুনামগঞ্জে অবিরাম বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে জেলার সব নদনদীর পানি। দ্বিতীয় দফার বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে ফের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল নেমে সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী নদী ধোপাজান, যাদুকাটা ও পাটলাই নদী এবং খাসিয়ামার ও চেলা নদী দিয়ে দ্রুত বেগে পানি প্রবাহিত হয়ে জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
সুরমা নদীর তীরবর্তী সুনামগঞ্জ শহরের নবীনগর, ষোলঘর, লঞ্চঘাট, আরপিননগর, সাহেববাড়িঘাট, বড়পাড়া, বাগানবাড়ি, মল্লিকপুর এলাকার রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক প্লাবিত হয়ে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী গত দুই দিনে সুনামগঞ্জে ৪১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উজান ও জেলায় এরকম ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুরমাসহ বেড়েছে সকল নদ-নদীর পানি। পানি বাড়ায় তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা অংশে মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো পানিতে তলিয়েছে। এতে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রীদের এই অংশ ফেরি নৌকা করে পার হতে হচ্ছে। এই সড়কের আনোয়ারপুর অংশেও পানি উঠেছে। তবে এই অংশে পানিতে স্রোত কম থাকায় যাত্রীরা হেঁটে পারাপার হতে পারছেন। তবে অনেকে সিএনজি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চালিয়ে পার হতে পারছেন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতে বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের পূর্বাভাসও রয়েছে।’