কোটা সংস্কারের দাবিতে সোমবার শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা ও সংঘর্ষের পর গতকাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। গতকালও দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলার শিকার হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সরকার–সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে কোথাও কোথাও। এসব ঘটনায় চট্টগ্রামে তিনজন, রাজধানীতে দুজন এবং রংপুরে একজন—মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল বিকেলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর ও রাজশাহীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়।
এই আহতদের মধ্যে ছয়জন গুলিতে আহতসহ আটজনকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১২৬ জন।
আজ বুধবার সকালে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বাচ্চু মিয়া জানান, হাসপাতালে ভর্তি আটজন হলেন, পথচারী রাজু (৩৯), আরেক পথচারী রাজু (৩৪), বাকি ছয় শিক্ষার্থী। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এদের শরীরে গুলির চিহ্ন আছে। এজন্য চিকিৎসকরা তাদের ভর্তি দিয়েছেন। গুলিতে আহত শিক্ষার্থীরা হলেন–পলাশ (১৮) রাতুল (২১) অনিক (২১) ফেরদৌস (২৩) শুভ (২০) ও রুবেল (২৮)।
এদিকে গতকাল রাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলও ছাড়তে হবে। এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান) এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় সব শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার (১৫ জুলাই) সংঘর্ষের ঘটনায় বেশিরভাগ আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে এসেছিল। তবে মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ঢাকা কলেজ চত্বর, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার আশপাশে থেকে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। এ ছাড়া অন্যান্য জায়গা থেকেও আরও লোকজন এসে চিকিৎসা নিয়েছে।