বাংলাদেশ সরকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে শক্তি প্রয়োগ করেছে এবং সারাদেশে চলমান আন্দোলনের সময় তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন পর্যবেক্ষণে বুধবার (১৭ জুলাই) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং এর ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাব দ্বারা বিশ্লেষিত এবং প্রমাণিত সাক্ষীর সাক্ষ্য, ভিডিও এবং ফটোগ্রাফিক প্রমাণ শিক্ষার্থী ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের বেআইনি বল প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য প্রমাণ করে যে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অনেক বছরের সহিংসতার ধারাবাহিকতা রয়েছে, যা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক গবেষক তকবীর হুদা বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সারা দেশে অন্যান্য ক্যাম্পাসে ছাত্র আবু সাঈদের হত্যা এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন এবং নিজস্ব সংবিধানের অধীনে প্রতিশ্রুতি অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতার অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করতে হবে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের আরও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে মঙ্গলবার বাংলাদেশে যে ছয়জন নিহত হয়েছেন, তাদেরই অন্যতম হচ্ছেন আবু সাঈদ। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মি. সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। নিহত অন্য পাঁচজনকে ছাপিয়ে মি. সাঈদকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে বেশ আলোচনা হতে দেখা যাচ্ছে, যার মূলে রয়েছে ঘটনার সময় ধারণ করা কিছু ভিডিও।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওইসব ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, পুলিশের তাক করা অস্ত্রের বিপরীতে মি. সাঈদ বুক পেতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এছাড়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে পুলিশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন অধিকার কর্মীরা।