Top Newsজাতীয়

আন্দোলনে রেলওয়েতে ক্ষতি অর্ধশত কোটি টাকা

মোহনা অনলাইন

কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ হয়েছে। এছাড়া সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সারাদেশে কার্ফু জারি করে সরকার। এ কারণে গত ১১ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে সারাদেশের রেল যোগাযোগ। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে রেলওয়ে সার্ভিস।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় রেলওয়ের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ৫৬ কোটি টাকার কাছাকাছি। ভাঙচুর করা হয়েছে ইঞ্জিন ও কোচ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেলপথ। এতে রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৫৬ কোটি ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার ৭৪২ টাকা। এর মধ্যে টিকিট রিফান্ডজনিত রাজস্ব ক্ষতি ৩২ কোটি ৫৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৪২ টাকা। গতকাল রোববার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতির এ তথ্য জানায়।

সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৭ কোটি ৯৯ লাখ ১৭ হাজার ৫৪২ টাকা। সিগন্যাল বিভাগের ক্ষয়ক্ষতি ৫৩ লাখ ৮৫ হাজার এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের ৫০ লাখ টাকার। বাণিজ্যিক বিভাগে টিকিট রিফান্ডজনিত রাজস্ব ক্ষতি দৈনিক ২ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার ৩২২ টাকা। সে হিসাবে গত ১৮ জুলাই থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত মোট ১১ দিন ট্রেন চলাচল বন্ধে ক্ষতি হয়েছে ৩২ কোটি ৫৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৪২ টাকা।

পশ্চিমাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ যেমন রংপুর ও জয়দেবপুর এলাকার বিভিন্ন লেভেল ক্রসিংয়ে ক্ষতি ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বগুড়া ও গাইবান্ধায় স্টেশনে ক্ষতির পরিমাণ ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ২৪০ টাকা। যান্ত্রিক বিভাগে ক্ষতি ৪ লাখ ৭০ হাজার এবং ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া সিগন্যাল বিভাগে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আর টিকিট রিফান্ডজনিত রাজস্ব ক্ষতি ১৮ কোটি ৪ লাখ টাকা।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এখনো ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তারা। রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত ১৯ জুলাই নরসিংদীর রায়পুরায় কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্র্বৃত্তরা। এর আগেরদিন গত ১৮ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার পথে নরসিংদীর সদরে কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের ট্রেনটি আটকে রাখে। এ সময় তারা কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা পানি দিয়ে সেই আগুন নিভিয়ে ফেলে। একইদিন চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনেও আগুন লাগানো চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরিবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় ট্রেনটি রক্ষা করা হয়।

এছাড়া রংপুর, জয়দেবপুর, বগুড়া ও গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলস্টেশনে ট্রেনের গ্লাস, দরজা, জানালা ও লেভেল ক্রসিং ভাঙচুর চালানো হয়।

এ বিষয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহদাত আলী জনকণ্ঠকে বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় তেলবাহী ট্রেন চলাচল করছে। কারণ গত কয়েকদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে রেলওয়ে কোচে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তাই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি উন্নত হলে সরকার সিদ্ধান্ত নিলে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।’ ট্রেন পুরোপুরি চালু হলে টিকিট রিফান্ডের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button