জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সহিংসতার জন্য দায়ী সবার জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে মানবাধিকার, অন্তর্ভুক্তি ও আইনের শাসনের মধ্যে সুশাসন নিশ্চিতের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি হয়েছে। এমনকি, দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার ও পুনরুজ্জীবিত করার, মৌলিক স্বাধীনতা এবং নাগরিক স্থান পুনরুদ্ধারের এবং বাংলাদেশের সবাইকে ভবিষ্যত গঠনে অংশীদার করার একটি ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশে বিক্ষোভ ও অস্থিরতার বিষয়ে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বলে জানান ভলকার তুর্ক।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণমাধ্যম ও প্রতিবাদ আন্দোলনের উপলব্ধ পাবলিক রিপোর্ট অনুসারে, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্টের মধ্যে ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। এর মধ্যে ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ৫ আগস্ট ও ৬ আগস্টে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহতদের মধ্যে বিক্ষোভকারী, পথচারী, পেশাগত দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিক ও বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আছেন। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী এবং পথচারী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
কারফিউয়ে চলাচল নিষেধাজ্ঞা ও ইন্টারনেট বন্ধের কারণে তথ্য সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, হাসপাতালগুলোকে তখনকার সরকার নিহত ও আহতদের বিবরণ দিতে বাধা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিক্ষোভ এবং পরবর্তী সহিংসতার সময় নিরাপত্তা বাহিনী অপ্রয়োজনীয় এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করেছে বলে গুরুতর এবং বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী ও সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে বল প্রয়োগ করেছে। এ সময় তারা রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জীবন্ত প্রাণঘাতী গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে ছররা গুলি ও বুলেট রয়েছে। কিছু বিক্ষোভকারীকে সাধারণত লাঠি, ইট বা এমন অস্থায়ী অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সেই বিবেচনায় নিরাপত্তা বাহিনী পুনরাবৃত্ত এবং পেলেট শটগান, হ্যান্ডগান এবং রাইফেলসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ক্রমাগত অপ্রয়োজনীয় এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ বল প্রয়োগ করে।