এদেশের চলচ্চিত্রকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যিনি তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের কালজয়ী অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। অনেক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন, যা আজও মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। রোমান্টিক, সামাজিক, পোশাকি, অ্যাকশন, সব ঘরানায় রূপালি পর্দায় উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল তার।
নায়করাজ রাজ্জাককে হারানোর সাত বছর পূর্ণ হলো বুধবার (২১ আগস্ট)। ২০১৭ সালের এইদিনে ৭৫ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। আজ ২১ আগস্ট নায়করাজ রাজ্জাকের প্রয়াণ দিবস।
৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের দক্ষিণ কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুর রাজ্জাক। সেখানেই বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল সিনেমার নায়ক হওয়ার। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্ম স্কুল থেকে সিনেমার ওপর পড়াশোনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। এরপর কলকাতার দুটি চলচ্চিত্রে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন।
এরই মধ্যে ১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগে। পরিবারসহ তিনি ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হন। ঢাকায় এসেও লেগে থাকেন তার স্বপ্ন নিয়ে। ষাটের দশকে নির্মাতা সালাউদ্দিনের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রবেশ করেন তিনি।
প্রায় ৫০ বছরের অভিনয় জীবনে বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, জীবন থেকে নেয়া, অবুঝ মন, রংবাজ, ওরা ১১জন, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছটির ঘণ্টা, বড় ভালো লোক ছিল, ও আমার দেশের মাটিসহ প্রায় ৫০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৬টি চলচ্চিত্রের পরিচালক রাজ্জাকের মালিকানাধীন রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশনের ব্যানার থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের কয়েক দশকের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচিত রাজ্জাক মোট পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন।