কয়েক বছর ধরে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ পাঠানো হতো। তবে এবার আর ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে না। এবার দুর্গাপূজায় ভারতে কোনো ইলিশ যাবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান। এমনকি অবৈধভাবেও যাতে কোনো ইলিশ ভারতে যেতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আগে দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর সম্ভব হলে ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হবে। দেশের মানুষ ইলিশ খেতে পারবে না, আর বিদেশে তা রপ্তানি করা হবে, সেটা হতে পারে না। এ কারণেই এবার দুর্গাপূজার সময় ভারতে যাতে কোনো ইলিশ না যায় তার জন্য ব্যবস্থা নিতে আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি। অবৈধ পথেও যাতে কোনো ইলিশ যেতে না পারে সে বিষয়ে সীমান্ত এলাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছি। এ সময় তিনি ইলিশ মাছের দাম স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসারও প্রতিশ্রুতি দেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, একটি মহল ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশ থেকে হিমায়িত গরুর গোশত আমদানির জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু দেশীয় খামারিদের কথা মাথায় রেখে আমরা কোনো গোশত আমদানি করতে চাচ্ছি না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের লাখ লাখ খামারি এখন গবাদিপশু লালন-পালনের সঙ্গে জড়িত। কয়েক বছর ধরে কোরবানির ঈদে ২০-২৫ লাখ পশু অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় দাম বৃদ্ধির অজুহাতে গোশত আমদানি করলে হয়ত ভোক্তারা কম দামে গোশত পাবে, কিন্তু এ খাতের চাবিকাঠি চলে যেতে পারে অন্য দেশের কাছে। এ বাজারটা নষ্ট করে ফেললে ভবিষ্যতে কী পরিস্থিতি হবে, সেটাও চিন্তার বিষয়। আমরা বরং উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে গোশতের দাম কমানোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি, যাতে একই সঙ্গে জনগণ স্বল্প ও ন্যায্যমূল্যে গোশত খেতে পারে এবং খামারিরাও টিকে থাকতে পারে।
সিন্ডিকেট ও করপোরেট ব্যবসায়ীদের কারণে পশু খাদ্য, গোশত-ডিমের দাম বেড়ে যায় জানিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, এই সিন্ডিকেট ভাঙার ব্যবস্থা করতে হবে। এ সময় তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনার খবর গণমাধ্যমে তুলে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনার খবর গণমাধ্যমে বেশি বেশি উঠে আসা দরকার। সমস্যাগুলো উঠে এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাণিসম্পদ খাতকে গণমাধ্যমে ভালোভাবে তুলে ধরলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।