বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন সালমান এফ রহমান ও সোহেল এফ রহমান মালিকানাধীন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করে। কারখানাটি সালমান এফ রহমান ও সোহেল এফ রহমানের মালিকানাধীন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশের আশুলিয়া জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম।
কারখানা শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের সারাবো এলাকায় অবস্থিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বেশ কয়েকটি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে। গত কয়েক দিন ধরে শ্রমিকেরা গত মাসের বেতন–ভাতা প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছে।
মঙ্গলবার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকের আগস্ট মাসের বেতন ও ছুটির ভাতা পরিশোধ করার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিকাল হলেও বেতন না দেওয়া শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে শ্রমিকরা কারখানার কাছেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক উভয় লেন অবরোধের করে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
একপর্যায়ে কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় কাশিমপুর থানা ও শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বেক্সিমকোর প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্ট জব্দ করায় বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার ভিন্ন একটি উৎস থেকে মাত্র ৪০০ জনের বেতন দেওয়া হলেও অবশিষ্টদের বেতন পরিশোধ করা যায়নি। যে কারণে এদিনও কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন তারা।
গত ১৩ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর এফ রহমানকে। ২৯ আগস্ট তাঁর ব্যক্তিগত ও মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাব জব্দ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এ ব্যাপারে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন এবং শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছে।