বিদ্যুৎ বিক্রির পাওনা ৮০ কোটি ডলারের বকেয়া পরিশোধে আদানির চিঠির পর এবার বাংলাদেশে প্রকল্প ঋণের ৬৩ কোটি ডলার সুদ চেয়েছে রাশিয়া। আর এই সুদের টাকা পরিশোধে রাশিয়া বাংলাদেশকে সময়ও বেঁধে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে (টিবিএস) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে আজ বুধবার এই তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দেওয়া ঋণের বকেয়া ও চলতি সুদ বাবদ ৬৩০ মিলিয়ন (৬৩ কোটি) মার্কিন ডলার আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছে রাশিয়া।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে টিবিএস জানিয়েছে, এই তারিখে সুদ পরিশোধ না করা হলে জরিমানা ও মেয়াদ বৃদ্ধির যে প্রস্তাব তা নিয়েও জটিলতা বাড়বে। কারণ চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের ঋণ চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সুদ পরিশোধ না করলে নতুন মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবও বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রূপপুর প্রকল্পে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৪ শতাংশ, যেখানে বকেয়ার জন্য জরিমানা সুদ আরোপ করা হয়েছে আরো ২ দশমিক ৪ শতাংশ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৫ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময়ে সুদ ও জরিমানা সুদ বাবদ পাওনা রয়েছে ৪৮০ মিলিয়ন (৪৮ কোটি) ডলার। এছাড়া গত ১৬ মার্চ থেকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুদ বাবদ পাওনা ১৫০ মিলিয়ন (১৫ কোটি) ডলার। এর বাইরে কমিটমেন্ট ফি বাবদ সাড়ে ৭ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে।
গত ২১ আগস্টে দেওয়া এই চিঠিতে ব্যাংক অব চায়নার সাংহাই শাখায় মার্কিন ডলার অথবা চীনের মুদ্রা ইউয়ানে পাওনা অর্থ জমা দিতে বলা হয়েছে। রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকায় গত জুনে বাংলাদেশ লেনদেনের বিকল্প পদ্ধতিতে বকেয়া সুদ, কমিটমেন্ট ফি ও জরিমানা মওকুফের আবেদন জানানোর পরে এই চিঠি দিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, গত ১০ সেপ্টেম্বর ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে দেশটির আরেক গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, বিদ্যুৎ বিক্রির পাওনা টাকা চেয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখেছেন ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।
চিঠির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানি গ্রুপ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ৮০ কোটি ডলার পায়।
মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে গৌতম আদানি বলেন, ‘আমরা যখন বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বজায় রাখছি, সেই সময়ে ঋণদাতারা আমাদের ওপর কঠোর হচ্ছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে থেকে আমরা যে ৮০ কোটি ডলার পাই, সেই অর্থ দ্রুত পরিশোধ করার জন্য হস্তক্ষেপ করতে আপনাকে অনুরোধ করছি।