Top Newsআন্তর্জাতিক

ফ্লোরিডায় ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের তাণ্ডব, নিহত ১০

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। মিল্টনের প্রভাবে দেখা দিয়েছে বন্যা, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ গ্রাহক আর নানান রকম দুর্ভোগের মুখোমুখি হচ্ছেন রাজ্যটির অধিবাসীরা। তবে যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল তার চেয়ে কম শক্তি নিয়ে ফ্লোরিডার উপকূলে আঘাত হেনেছে মিল্টন। ঘূর্ণিঝড়টির আঘাতে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

হারিকেন মিল্টন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিনের শেষভাগে আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ফ্লোরিডায় আঘাত হানে। এর ফলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যায় উপড়ে পড়া গাছের গুঁড়ি আর বৈদ্যুতিক খুঁটিতে। টাম্পা শহরে একটি বেসবল স্টেডিয়ামের ছাদ উড়ে যায়। প্রায় ৩০ লাখ বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। তবে মিল্টনের প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া বন্যার চেয়ে ঝড়ো বাতাসে দুর্ঘটনার কারণেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বেশি।

ফ্লোরিডার পূর্ব উপকূলীয় শহর ফোর্ট পায়ার্সের ৭০ বছর বয়সী সুসান স্টেপ বলেন, ‘ঝড়টি ছিল বেশ ভয়ঙ্কর।’ বুধবার রাতে ‘মিল্টন’ এখানে একটি বৃদ্ধাশ্রমে আঘাত করলে চারজন মারা যায়। এ বিষয়ে সুসান বলেন, ‘ওই লোকগুলোকে আবাসস্থলের বাইরে একটি গাছে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।’

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পাঁচজন সেন্ট লুইস কাউন্টিতে মারা গেছে। এ ছাড়া ভলুসিয়া কাউন্টিতে তিনজন ও সেন্ট পিটার্সবার্গে দুজনের মৃত্যুর খরব জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস।

ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডি-স্যান্টিস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ঝড়টি ছিল উল্লেখ করার মতো। তবে এটি খুবই খারাপ পরিস্থিতি তৈরির যে আশঙ্কা ছিল তা করতে পারেনি।’

মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ফ্লোরিডা ও দক্ষি-পূর্ব রাজ্যগুলোতে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ‘হেলেনের’ তাণ্ডবে ২৩৭ জন নিহত হয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই ফ্লোরিডা উপকূলজুড়ে আঘাত করে ক্যাটাগরি-৩ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় মিল্টন। মিল্টনের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয় টর্নেডোর। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস ফ্লোরিডা রাজ্যটিতে মোট ১২৬টি টর্নেডোর হুঁশিয়ারি বার্তা দেয়।

এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্যার পানিতে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধারে অভিযান চালাতে দেখা যায় টাম্পা শহরের কাছে। একটি বহুতল ভবন থেকে ৫৮ বছর বয়সী জাস্টিনো টোরেস নামের এক লোককে উদ্ধারের পর তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবতে পারিনি যে আবারও বাড়িতে ফিরতে পারব। আমি নিজেকে সৃষ্টিকর্তার হাতে সঁপে দিয়েছিলাম।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতসহ ধ্বংসাত্মক অবয়ব নিয়ে নিয়মিতভাবে সৃষ্টি হচ্ছে এই ঝড়গুলো। এ ছাড়া সাগরের উপরিভাগ উষ্ণ থাকায় ঘূর্ণঝড়গুলোকে বেশি মাত্রায় জলীয় বাষ্প সরবরাহ করার ফলে সেগুলো আরও শক্তিশালী হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button