বাংলাদেশের টেলিভিশনগুলোর সাদা কালো যুগ পেরিয়ে এখন অব্দি উপস্থাপনার মাধ্যমে দেশব্যাপী সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে স্থান দখল করে নিয়েছেন যিনি। নব্বই দশক ক্যারিয়ার শুরু করে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তার কথার জাদুতে মুগ্ধ হয়ে আসছেন তার ভক্ত সমর্থকরা। গুণী এই মানুষটি একাধারে উপস্থাপক, পরিচালক, লেখক ও প্রযোজক। হ্যা বলা হচ্ছে দেশ সেরা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেতের কথা।
আজ ২৩ অক্টোবর, ২০২৪ সাল হানিফ সংকেতের জন্মদিন। জীবনের ৬৫টি বসন্ত পেরিয়ে ৬৬ বছরেও যেন এখনও তরুণই রয়ে গেছেন তিনি। ১৯৫৮ সালের এই দিনে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন বহুমাত্রিক গুণে গুণান্বিত একুশে পদক প্রাপ্ত এই উপস্থাপক।
সবার কাছে দোয়া চেয়ে হানিফ সংকেত বলেন, ‘আপনাদের ব্যস্ততম জীবনে আমার এই জন্ম তারিখটি মনে রেখে যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন- সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। আপনাদের এই অকৃত্রিম ভালোবাসাই আমার চলার পথের পাথেয়। দোয়া করবেন। ভালো থাকবেন সবাই।’
১৯৮৯ সালে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ উপস্থাপনা শুরু করেন তিনি। ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিলেও প্রয়াত ফজলে লোহানীর ‘যদি কিছু মনে না করেন’ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে প্রথম খ্যাতি লাভ করেন এই শিল্পী।
‘ইত্যাদি’তে হানিফ সংকেত তার উপস্থাপনায় কেবল হাস্যরসকে প্রধান্য দেন না। এর মাধ্যমে সমাজের নানা প্রচলিত অসঙ্গতির বিরুদ্ধে জোরালো কণ্ঠ রাখেন হানিফ সংকেত। অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে সমসাময়িক নিন্দিত ঘটনার বর্ণনা ও বিরোধিতা থাকে কিছুটা রম্য হলেও নজর কাড়ে সবার।
নিজের কাজের বিষয়ে খুবই যত্নশীল হানিফ সংকেত। নাটক পরিচালনাতেও নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন অনেক। তার পরিচালিত জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে ‘আয় ফিরে তোর প্রাণের বারান্দায়’, ‘দুর্ঘটনা’, ‘তোষামোদে খোশ আমোদে’, ‘কিংকর্তব্য’, ‘কুসুম কুসুম ভালোবাসা’, ‘শেষে এসে অবশেষে’ উল্লেখযোগ্য।
চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন হানিফ সংকেত। বেশ কয়েকটি ব্যঙ্গ ও রম্য রচনা লিখেছেন তিনি। তার মধ্যে ‘চৌচাপটে’, ‘এপিঠ ওপিঠ’, ‘ধন্যবাদ, ‘অকান্ড কান্ড, ‘খবরে প্রকাশ’, ‘ফুলের মতো পবিত্র’, ‘প্রতি ও ইতি, ‘আটখানার পাটখানা’ অন্যতম।
এছাড়া উপস্থাপনার পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন হানিফ সংকেত। এছাড়া ‘প্রথম প্রেম’ নামে একটি সিনেমায় ‘তু তু তু তারা, মর্জিনার বাপ মার্কা মারা’ শিরোনামে একটি গানও গেয়েছেন তিনি।