Top Newsআন্তর্জাতিক

গ্রিনল্যান্ড নিয়ন্ত্রণে বদ্ধপরিকর ট্রাম্প

মোহনা অনলাইন

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। আর্কটিক অঞ্চলের এই দ্বীপটি এখন ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে আছে। সুমেরু অঞ্চলে অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অনেকাংশে স্বায়ত্তশাসিত একটি অঞ্চল। একই সঙ্গে এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ দ্বীপ।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পাকাপোক্ত করার ব্যাপারে গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দারা নানা মতে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বেশিরভাগেরই মতামত, সামগ্রিক উন্নতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক তাদের জন্য সুবিধাজনক হবে। পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের অংশ না হয়ে শুধুমাত্র কৌশলগতভাবে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক চান তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালে প্রথমবার গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। এবার তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে। দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রয়োজনে অর্থনৈতিক বা সামরিক বলপ্রয়োগের কথাও উড়িয়ে দেননি তিনি।
ডেনমার্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়, এর আঞ্চলিক অখণ্ডতা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।

গ্রিনল্যান্ড ভৌগোলিকভাবে উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত। তবে গত ৩০০ বছর ধরে অঞ্চলটি ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ডেনমার্ক থেকে গ্রিনল্যান্ডের দূরত্ব প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার। ২৯ শতকের মধ্যভাগে দ্বীপটি উপনিবেশ হিসেবে শাসিত হতো। তখন বেশিরভাগ সময়ই এ অঞ্চল ছিল বিচ্ছিন্ন ও দারিদ্র্যপীড়িত।

১৯৫৩ সালে গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং গ্রিনল্যান্ডবাসীরা ডেনিশ নাগরিকত্ব পায়। ১৯৭৯ সালে গণভোটের মাধ্যমে গ্রিনল্যান্ড স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। তবে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষানীতি এখনও ডেনমার্কই নিয়ন্ত্রণ করে।

গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারেন, এমন ঝুঁকি খুবই কম। তবে গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে সামরিক পদক্ষেপের বিষয়টিও ট্রাম্প উড়িয়ে দেননি।

ইতিমধ্যে গ্রিনল্যান্ডে নিজেদের ঘাঁটি ও প্রচুর সৈন্য থাকায় দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কঠিন হবে না।গ্রিনল্যান্ডের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কার্যত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক জ্যাকবসেন বলেন, ট্রাম্প ঠিকঠাক না জেনেই এসব মন্তব্য করেছেন এবং বিষয়টি তিনি ভালোভাবে বুঝতেও পারেননি। গ্রিনল্যান্ডে ওয়াশিংটন যদি সামরিক শক্তির ব্যবহার করে, তাহলে এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয় হয়ে উঠবে।

যদিও গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুতে এগেদে জানান, নিজস্ব শর্তসাপেক্ষে প্রতিরক্ষা ও খনি সম্পর্কিত বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে যাচ্ছেন তারা। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেত্তে ফ্রেডরিকসন বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে ৪৫ মিনিট ধরে চলা এক ফোনালাপে বলেন, গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ কী হবে তা তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নেবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া যদি কোনো কারণে, কখনো যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে গ্রিনল্যান্ডই তাদের জন্য সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথ। যা গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button