রেল সেক্টরে চলছে অস্থিরতা।দাবি আদায়ে অনড় রেল কর্মীরা। রেল পরিচালনায় জড়িত ‘লোকো রানিং স্টাফ’, ‘গার্ড’ ও ‘টিটিই’ পদে কর্মরতরা গত প্রায় এক মাস ধরে রেলওয়ের ‘মাইলেজ’ ও ‘পেনশন’ দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
গতকাল আন্দোলনকারীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ঘোষণা করেছেন দাবি পূরণ না হলে আজ (২৭ জানুয়ারি) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
প্রায় ৪ হাজার রানিং স্টাফ আজ থেকে কর্মবিরতি শুরু করবেন।বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ১৮৬২ সাল থেকে চালু থাকা একটি নিয়ম হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটি বাতিল করতে সংসদ ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন দরকার হয়। এগুলো না করেই আমাদের রানিং স্টাফদের পেনশন ও মাইলেজ বাতিল করা হয়েছে।আমরা এর প্রতিবাদে গত ১ জানুয়ারি থেকে সরকারকে বলে আসছি। কিন্তু আমাদের কথা শোনেনি। তাই গতকাল আমরা সভা করে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজ সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সারা দেশে রেল চলাচল বন্ধ থাকবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আর কোনো কথা শুনব না।
জানা যায়, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ১৬০ বছর ধরে অবসরের পর মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পেয়ে আসছেন। রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক- যেকোনো দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন সচল রাখেন রানিং স্টাফরা। তাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসেও বন্ধ নেই। অথচ তাদের সুবিধা নিয়ে এখন বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। রানিং স্টাফদের দাবির মধ্যে আছে- পার্ট অফ পে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদান বন্ধ করে দেওয়া ২০২১ সালের ৩ নভেম্বরে জারি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অসম্মতিপত্র প্রত্যাহার এবং নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রের বৈষম্যমূলক ১২ ও ১৩ নম্বর শর্ত বাতিল করে রেলওয়ের প্রচলিত কোড ও বিধিবিধানের আলোকে নতুন আদেশ জারি। ২০২২ সালের পর নিয়োগপত্রে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়। নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না এবং মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না।
এ ছাড়া অবসরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পাবেন, যা রেলওয়ের কোনো আইনে উল্লেখ নেই। রানিং স্টাফরা এসব দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন।