সুনামগঞ্জে নদীর পানি বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: কুলেন্দু শেখর দাস
গত কয়েকদিন ধরে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে অবিরাম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে সুনামগঞ্জের নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে সুনামগঞ্জ শহরের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করলেও এখন পানি কমতে শুরু করেছে । এছাড়াও জেলার ছাতক,দোয়ারাবাজার,তাহিরপুর,ধর্মপাশা,শাল্লাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল এবং এখনো কিছু কিছু উপজেলায় পানি থাকার কারনে র্দূভোগে আছেন মানুষজন। বিশেষ করে পানির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের রোজি রোজগার বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জের ষোলঘরস্থ সুরমা নদীর পানি এখনো বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং গত ২৪ ঘন্টায় আজ শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মিঃ মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে জেলার ছাতক উপজেলায় সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ফলে শহরের বিভিন্ন অলিগলি ও বাসাবাড়িতে এখনো পারি রয়েছে ফলে চরমর্দূভোগে আছেন সাধারন মানুষজন।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর, নবীনগর, ধারারগাও, জেলরোড, উত্তর আরপিননগর, তেঘরিয়া ও বড়পাড়া এলাকার সড়ক ও কিছু ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে গেছে। এছাড়া সুনামগঞ্জ সদর ছাতক,তাহিরপুর,দোয়ারাবাজার ধর্মপাশা দিরাই,শাল্লা ও জামালগঞ্জের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ ছাতক সড়কে পানি ওঠায় ছাতকের সঙ্গে সারাদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকলে ও এখন সড়কে যানবাহন চলাচল করতে শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন গতকয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ সদর,বিশ^ম্ভরপুর,তাহিরপুর,ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৮৭৭ হেক্টর বোরো ধান,৭৫ হেক্টর বাদাম,আউশ বিজতলা ৭৪ হেক্টর,,সবজি ৬০ হেক্টর,আউশ ধান ২০ হেক্টর পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতির পরিমান ৮০ লাখ টাকা হবে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলামৎস্য অফিসার সুনীল মন্ডল জানিয়েছেন, টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার সদর,ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৪ শত পুকুরের ৩৫ টন মাছ ও ৩০ লাখ পোনা বানের পানিতে ভেসে যায়। যার ক্ষতির পরিমান প্রায় আড়াই কোটি টাকা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন ,মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি এবং সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘরস্থ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং তাহিরপুরের যাদুকাটাসহ অন্যান্য নদীর পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন ইতিমধ্যে ছাতক,দোয়ারাবাজার,সদর ও তাহিরপুরে প্রায় ৮ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সরকারের মাধ্যমে প্রশাসন উদ্যোগে ১৪০ মেট্রিন টন জি আর এর চাল,নগদ ১২ লাখ টাকা ও২হাজার শুকুনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। ২৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় শিক্ষ্কাার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এবং ২০টির মতো আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তত রাখা হয়েছে।