তুমব্রু সীমান্তে থমকে গেছে কৃষি কর্মকান্ড, সীমান্ত সড়কে যাচ্ছে না শ্রমিকরা
রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান প্রতিনিধি
মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যান্তরে একদিন বন্ধ থাকার পর আবারো গুলাগুলির শব্দে কেপে উঠেছে সীমান্তের পাহাড়। গত ৪ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তলব করার দিন গুলাগুলির শব্দ শুনা না গেলেও ৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সকালে আবারো গুলাগুলির শব্দ ভেসে এসেছে এপারে।
এদিকে মিয়ানমারের অভ্যান্তরে গুলাগুলির প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসরত মানুষের মাঝে। বিশেষ করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাড়ি ও রেজু ভাজাবনিয়া পয়েন্টে চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে।
শ্রমিকদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশ সীমান্ত সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে সীমান্ত ঘেষা ক্ষেতখামারে যেতে পারছে না শত শত কৃষক। এতে ফসল তোলা নিয়ে বাড়তি ভাবনা বেড়েছে তাদের।
বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসরত বাসিন্দা থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, আগস্ট মাসের শুরু থেকে সেদেশের রাখাইন রাজ্যসহ কয়েকটি এলাকায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান বিদ্রোহী বাহিনী আরাকান আর্মি (এএ) এর মধ্যে লড়াই চলছে। আরাকান রাজ্যের ওয়ালিদং, ফকিরাবাজার, নেম্রে, সাহাব বাজার, নারায়ংসং, বলিবাজার এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে গুলাগুলির ঘটনা। ওপারের গুলাগুলি হলেও মর্টারশেল ও গুলি ছুটে আসছে বাংলাদেশ সীমান্তের ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু, মনজয়পাড়া এলাকায়।
স্থানীয়দের মতে, বাইশফাঁড়ি সীমান্তের প্রাচীর হিসেবে কালোপাহাড়টি বড় ধরনের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করেছে বাংলাদেশের মানুষকে। দীর্ঘকার পাহাড়টিতে প্রায়সময় মিয়ানমারের ছুড়া গুলা এসে পড়ে বলে জানান স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা যায়, বিজিবি ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী কৃষকরা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকলেও সীমান্তে বসবাসরত মানুষ জুম বা ক্ষেত খামারের প্রয়োজন ছাড়া পাহাড়ে যাচ্ছেন না। দোকানপাটে বসে সীমান্ত পরিস্থিতির কথা বলছেন একে অপরকে।
সাম্প্রতিক মিয়ানমারের অভ্যান্তরীণ কার্যকলাপ বিষয়ে সর্তক রয়েছে সীমান্ত রক্ষি বাহিনী বিজিবি। তারা সীমান্তে পূর্বের তুলনায় টহল বাড়িয়ে স্থানীয় মানুষকে আশ্বস্ত করছেন। পাশাপাশি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অন্য সীমান্ত এলাকায় জনপ্রতিনিধিরাও কাজ করছেন।
এদিকে সীমান্তে উত্তেজনায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বলে জানান বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি ।
উল্লেখ্য, দুদেশের ৩১ থেকে ৪১নম্বর সীমান্ত পিলার পর্যন্ত প্রায় ৪২কিলোমিটার এলাকার সীমান্ত পাহারায় নিয়োজিত রয়েছে কক্সবাজার ৩৪বিজিবি। এরপর ৪১ থেকে ৫৫নম্বর পিলার সীমান্ত রক্ষায় কাজ করছে ১১বিজিবি।