ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ফোনে কথা বলা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে অনেকের। প্রেমালাপ হোক কিংবা কর্মক্ষেত্রের আলোচনা, ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলার মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হতে পারে মানুষের শরীরে। সপ্তাহে আধঘণ্টার বেশি ফোনে কথা বললে উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অন্ত ১২ শতাংশ। নতুন গবেষণায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গোটা বিশ্বের জনসংখ্যার নিরিখে ১০ বছরের বেশি বয়সিদের এক তৃতীয়াংশেরই মোবাইল রয়েছে। আর মোবাইল থেকে যে রেডিওফ্রিকোয়েন্সি এনার্জির বের হয়, তা-ই শরীরে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। এই উচ্চ রক্তচাপ থেকেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং সময়ের আগেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে দুনিয়াজুড়ে। চিনের গুয়ানঝাউয়ের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, আপনার হার্টের সুস্থতা নির্ভর করে আপনি কতক্ষণ ফোনে কথা বলচেন, তার উপর। যত বেশি কথা বলবেন, ঝুঁকি তত বাড়বে।
ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল ডিজিটাল হেল্থে এই সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারে শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তা জানতে একটি সমীক্ষা করা হয়। ৩৭ থেকে ৭৩ বছরের মধ্যে যাদের বয়স, এমন ২ লক্ষ ১২ হাজার ৪৬ জনের উপর সমীক্ষা করা হয়। কত বছর ধরে তাঁরা মোবাইল ব্যবহার করেন, সপ্তাহে কত ঘণ্টা ফোনে কথা বলেন, হ্যান্ডস ফ্রি কিংবা স্পিকার ব্যবহার করে কথা বলেন কি না- এই সবই আলাদা আলাদা করে খতিয়ে দেখা হয়েছে। তারই মধ্যে জানা গিয়েছে, প্রতি সপ্তাহে যারা ৩০ মিনিট বা তার বেশি সময় কথা বলে, তাদের ১২ শতাংশের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা গিয়েছে। পুরুষ ও মহিলার ক্ষেত্রে একই ফল মিলেছে।
যাঁরা সপ্তাহে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা ফোনে কথা বলে সময় কাটায়, তাদের ২৫ শতাংশের এই ঝুঁকি থাকে। তবে যারা বহুদিন মোবাইল ব্যবহার করছে কিংবা যারা হ্যান্ডসফ্রি কিংবা স্পিকার ব্যবহার করে, তাদের ঝুঁকি কতখানি, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। তবে প্রত্যেককেই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।