বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ভেতরে-বাইরে শ্রমিক আন্দোলন, ৪ঘন্টা রাস্তা বন্ধ!
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের সাটিয়াবাড়ি গ্রামের ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। একই দাবীতে কারখানার ভেতরেও কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করেন তারা।
শনিবার (১৩ মে) বেলা ১১ টার থেকে কাপাসিয়া-রাজেন্দ্রপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে এবং কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করে ওই পোশাক কারখানার প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক। এতে প্রায় ৪ঘন্টা সড়কে সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। সড়কের দু’পাশে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে,বেতনের দাবীতে বেলা ১১ টার দিকে সড়ক অবরোধ শুরু করে শ্রমিকেরা। পুলিশ এসে তাদের কারখানায় ফেরত যেতে অনুরোধ করে। কিন্তু কারখানার এডমিন থেকে বেতন পরিশোধের বিষয়ে নির্দেশনা না পেয়ে সড়ক ছাড়তে রাজি হয়নি শ্রমিকরা। এতে সড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে থানার ওসি তাদেরকে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন। সড়ক ছেড়ে কারখানার ফটকের ভেতর ফিরে যেতে অনুরোধ করলেও সমাধান না পেলে রাস্তা থেকে সড়ে আসবেননা বলে জানান শ্রমিকরা। এদিকে, মূল ফটকের ভেতরেও আন্দোলন করতে দেখা যায় শ্রমিকদের। উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে “বেতন চাই, বেতন চাই ” বলে এডমিনের দৃষ্টি কামনা করেন।
কারখানার একাধিক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেক শ্রমিকের দুই-তিন মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। বারবার যোগাযোগ করলেও দেয়–দিচ্ছি করে ঘুরাচ্ছে। দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ার কারণে খেয়ে না খেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এছাড়াও বাসা ভাড়া ও দোকানের বাকী পরিশোধ করতে না পেরে অপমান অপদস্ত হতে হচ্ছে তাদের। কারখানার কর্তৃপক্ষকে কয়েকদিন ধরে বললেও কোনো সুরাহা না পেয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে তাদের।
কারখানার শ্রমিক মিনা আক্তার বলেন, তিন মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। কম করে হলেও ৮-১০ বার তারিখ দিয়েও বেতন দিচ্ছে না। বেতন না পেলে কী করে চলে সংসার।
কারখানার আরেক শ্রমিক মনির হোসেন বলেন, তাদেরকে বলতে বলতে আমরাও ধৈর্যের সীমা হারিয়ে ফেলেছি। উপায় না পেয়ে রাস্তায় এসেছি।
এ বিষয়য়ে ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে জানান, শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। আমাদের সাথে শিল্প পুলিশের সদস্যরাও ছিলো। মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।