ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি নিরাপদ-শান্তিপূর্ণ বিশ্ব উপহার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সংঘাত নয়, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি; শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অব্যাহত রাখতে যা যা করা দরকার, বাংলাদেশ তার সবকিছু করবে। ’
সোমবার (২৯ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় শান্তিরক্ষী ৫ শহীদ পরিবার ও ৫ আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তায় বাংলাদেশ দায়িত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য নাম। ’ বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করা এখন অতীতের চেয়ে অনেক কঠিন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ -সেটা আজও অনুসরণ করছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা দেশে স্থিতিশীলতায় কাজের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্বও পালন করেন। ’ শান্তিরক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা সংঘাত প্রতিরোধ ও শান্তি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। অন্য দেশের শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। শান্তি রক্ষায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। এ জন্য আপনাদের জন্য দোয়া করি, ধন্যবাদ জানাই। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দারিদ্র্য কমাতে সক্ষম হয়েছি। পদ্মা সেতুর মতো সেতু করেছি। দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় উন্নয়ন হয়েছে। ’
উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশের নারী পুলিশ কর্মকর্তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের ১৫৭ জন নারী পুলিশ শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের ১ হাজার ৭৬৬ জন নারী শান্তিরক্ষী বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষীরা নানা প্রতিকূলতার মাঝে প্রচণ্ড মানসিক শক্তি নিয়ে মানুষকে আপন করে নিয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশ হাইতির ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অসহায় মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তেমনি আফ্রিকা এমনকি ইউরোপের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তৃণমূল পর্যায়ে পুলিশের সেবা প্রদান, পুলিশের প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো পুর্নবিন্যাস ও পুনর্গঠন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সমাদৃত হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষীরা দুর্গম ভৌগলিক পরিবেশ ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও প্রচন্ড মানসিক শক্তি নিয়ে মানবিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বশান্তি রক্ষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ও অনন্য অবদান রয়েছে, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা বাড়িয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ পুলিশ অঙ্গীকারবদ্ধ