জাতীয়

নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের পারদ বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক

নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তপ্ত। বুধবার (১২ জুলাই) একই সময়ে রাজধানীর বাইতুল মোকাররমে আওয়ামী লীগ এবং নয়া পল্টনে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের কর্মসূচীর ডাক দিয়েছে। এই অবস্থায় রাজধানীতে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক ‘উত্তাপ’।

একই দিনে পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীতে এক ধরনের উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার ফলে সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলনে থাকা বিএনপি আজ বুধবার এক দফা দাবি ঘোষণা করবে। বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে বড় জমায়েত করে এক দফা আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে। তাদের সঙ্গে থাকবে সমমনা দলগুলোও।

একইদিন শান্তি সমাবেশ কর্মসূচির নামে বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটি ঢাকার রাজপথ বিএনপিকে ছেড়ে দিতে চায় না। আন্দোলনের আঁচ যেন রাজধানীতে না লাগে, সেই চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।

সমাবেশের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, শান্তি সমাবেশ সফল করতে প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশ নেবে। তারা কড়া অবস্থানে থেকে রাজপথ নিজেদের দখলে রাখবে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যেন সমাবেশের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকব। ’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটের শান্তি সমাবেশ সফল করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কড়া অবস্থানে থাকবে এ সমাবেশে। বিএনপি-জামায়াত ঝামেলা করতে চাইলে ছেড়ে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন থাকায় ঢাকা মহানগর উত্তরে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করার ব্যাপারে আইনি বিধিনিষেধ রয়েছে। সে কারণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সঙ্গে মিলে যৌথভাবে এ শান্তি সমাবেশে অংশ নেবে তারা। মিছিল নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানার নেতারা সমাবেশে যোগ দেবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিভিন্ন জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের পদত্যাগ তথা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগকে “এক দফা” হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আন্দোলনের নতুন যাত্রা শুরু করতে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সব রাজনৈতিক দল নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাদের নতুন গণতন্ত্রের জন্য যে যাত্রা, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নতুন যে আন্দোলনের যাত্রা তার ঘোষণা আমরা দেব। ’

সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে। সমাবেশস্থল ছাড়াও অলিগলিতে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসংখ্যাও বাড়তে থাকে।

মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের প্রস্তুতি রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ইতোমধ্যে মোতায়েন রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। মতিঝিল বিভাগ ছাড়াও অন্য বিভাগের পুলিশও সমাবেশকে কেন্দ্র করে আনা হয়েছে। সমাবেশের নামে কেউ নাশকতা বা বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ভোটের পরিবেশ দেখতে ঢাকায় অবস্থান করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। এমন সময় প্রধান দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ কি বার্তা দিতে চাচ্ছে।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button