জীবনধারা

একা থাকুন আনন্দে থাকুন

মোহনা অনলাইন

এই সিদ্ধান্তটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একা থাকলে আপনি ‘ভাল’ থাকবেন কি না, তা আপনাকেই বুঝতে হবে। এমনিতে আজকাল যাঁরা অণু পরিবারে বড় হন, ফ্যামিলি বন্ডিংয়ের ধারণা তাঁদের অনেকর মধ্যেই অতটা প্রবল হয় না। ভাই-বোনের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, শেয়ার করা, সবাই মিলে আড্ডা দেওয়া—এই বোধগুলো অতটা প্রবল না হওয়ায় এঁরা অনেকেই বাকি জীবনটাও ‘একা’ থাকতেই স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন

আবার অনেকেই কোনও সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরে সিদ্ধান্ত নেন ভবিষ্যতে আর নতুন করে প্রেমে পড়বেন না! সম্পর্কের তিক্ততা এঁদের ক্ষেত্রে নতুন করে ওই একই পথে পা না বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আবার কোনও কাছের বন্ধু বা আত্মীয়কে অসুখী বিয়ে বা সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে যেতে দেখলেও ‘বিয়ে’ বা ‘প্রেম’-এর প্রতি আস্থা হারান অনেকে। যদিও ভবিষ্যতে যে মনে প্রেমের রং ধরবে না, এমন নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারে না।

তবে, এঁদের অনেকেই মানসিকভাবে একা থাকার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেন। তবে একা থাকতে হলে সবার আগে নিজের সাপোর্ট সিস্টেম দৃঢ় করা চাই। হয়তো স্বামী বা স্ত্রী পাশে না-ই থাকলেন, কিন্তু বন্ধু, প্রতিবেশি বা কাছের মানুষ যদি না থাকে, তাহলে একেবারে একা একা নিজের ভরসায় বাকি জীবন কাটানো সম্ভব নয়। তা সে প্রয়োজনেই হোক, বিপদেই হোক বা নিছক সঙ্গ দেওয়ার জন্য—ফ্রেন্ড সার্কল যাঁদের নেই, তাঁদের একা থাকার সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভাল। এখন অনেক অ্যাপার্টমেন্টেই কমিউনিটি লিভিংয়ের কনসেপ্ট জনপ্রিয় হচ্ছে। এটিও কিন্তু আপনার সাপোর্ট সিস্টেমের অঙ্গ। তবে ঠিক কোন কোন কারণে আপনি বিয়ে করতে চাইছেন না, আর একা থাকলে ভবিষ্যতে সুখী থাকতে পারবেন কিনা—এই দু’টো জিনিস বোঝা খুব জরুরি।

‘একা’ থাকা নিয়ে আমাদের চারপাশের সমাজে বেশ কিছু স্টিগমা কিন্তু এখনও বিদ্যমান। একা মহিলা (সিঙ্গল মাদার হলে তো কথাই নেই!) বাড়িভাড়া নিতে এলে তাঁর প্রতি সন্দেহজনক দৃষ্টি খুবই চেনা। আশেপাশের প্রতিবেশিদের থেকে টিকাটিপ্পনি তো রোজকার ব্যাপার। স্টার্ট আপ শুরু করতে চাইলে বা বিজ়নেস লোন চাইলেও একা মহিলাদের কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। আর সিঙ্গল পেরেন্টদের ক্ষেত্রে (মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে) সন্তান দত্তক নেওয়ার নানা জটিলতা ও বিধিনিষেধ তো আছেই। একইসঙ্গে একা থাকলে নিরাপত্তার দিকেও আলাদা করে নজর দেওয়া জরুরি। অনেকেই হয়তো আপনার একা থাকার সুযোগ নিতে পারেন।

বিশেষ করে আপনি যদি অন্য শহরে একা থাকেন, তাহলে তো আরওই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সবক্ষেত্রেই বন্ধুবান্ধব, ভাই-বোন বা আত্মীয়-পরিজনদের নেটওয়র্কটা মজবুত রাখা প্রয়োজন। নতুন নতুন বন্ধু অবশ্যই বানাবেন, কিন্তু প্রাথমিক আলাপেই জানানোর প্রয়োজন নেই যে আপনি একা থাকেন বা বিবাহবিচ্ছিন্ন! বরং, নিজের নিরাপত্তার খাতিরে হাতের কাছে লিখে রাখুন জরুরি ফোন নম্বর, স্থানীয় থানার নম্বর। স্পিড ডায়ালে সেভ করে রাখুন সবচেয়ে কাছের মানুষদের নম্বর। আর প্রয়োজনে সবকরম আইনি সহায়তাও পেতে পারেন তিনি।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button