বাংলাদেশের মীল্যস্ফীতি ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের প্রথম সারির এক প্রতিকার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন বলছে, আগস্টে মুদ্রাস্ফীতি ২৩ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে যাওয়ার কারণে গড় মূল্যস্ফীতি ৯.৯২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২.৫৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে খাদ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি ছিল ২০১১ সালের অক্টোবরে ১২.৮২ শতাংশ।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে গ্রামীণ এলাকায়। সেখানে এর পরিমাণ ১২.৭১ শতাংশ। গত জুলাইতে এটি ছিল ৯.৮২ শতাংশ। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৪০ শতাংশ। এমন এক সময়ে এই মূল্যস্ফীতি বাড়ছে যখন আশেপাশের দেশসহ সারা বিশ্বে এটি কমে আসছে।
একই বিষয়ে দেশ রূপান্তর পত্রিকার শিরোনাম, খাবারের দাম কমেছে সারা বিশ্বে, দেশে রেকর্ড বৃদ্ধি। এই খবরটিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-এফএও এর তথ্য অনুযায়ী, গত আগাস্ট মাসে সারা বিশ্বে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে সর্বনিম্ন হয়েছে। এই সময়ে চাল ও চিনি ছাড়া বিশ্ববাজারে প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দামই কমেছে। তবে উল্টোচিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা ছাপিয়ে ধার দেওয়াটা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিয়েছে।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশ সুদহার বাড়িয়ে যেখানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করছে সেখানে বাংলাদেশ হাঁটছে উল্টো পথে। ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে এখনো কৌশলে সুদহার কমিয়ে রাখা হয়েছে। তাছাড়া বাজার অব্যবস্থাপনার কারণেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
টাকার মূল্য কমে যাওয়া নিয়ে নিউ এইজ পত্রিকার শিরোনাম, ৪৬ বছরের মধ্যে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার সবচেয়ে বড় দরপতন। এই খবরে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে টাকার মান ২৬.১ শতাংশ কমার পর ডলারের বিপরীতে স্থানীয় এই মুদ্রার অবমূল্যায়ন এখনো চলছে। ’২৪ অর্থবছরে সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশি মুদ্রার মান আরো ১.৮ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে আন্তঃব্যাংক ডলারের দাম ১০৮ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২৩ অর্থবছরটি স্থানীয় মুদ্রার জন্য গত বেশ কিছু বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ছিল। কারণ এবছরই অর্থনৈতিক দুর্বলতা, ডলার সংকট এবং নিত্য পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। এর আগে ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে টাকার অবমূল্যায়ন সর্বোচ্চ ৭১ শতাংশ হয়েছিল। সেবছর টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে ৮.৮ টাকা থেকে ১৫.৯৫ টাকায় দাঁড়িয়েছিল।
বণিক বার্তা পত্রিকার শিরোনাম, রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে (বিপিএম৬) দেশের রিজার্ভ এখন ২১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্ট মেয়াদের আমদানি দায় পরিশোধের পর রিজার্ভের বড় পতন হয়েছে।
গত সপ্তাহে আকুর পেমেন্ট বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ১৩১ কোটি ডলার। রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় কমে যাওয়ার প্রভাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে সংকট আরো বেড়েছে।
ডলার সংকট নিয়ে মানবজমিন পত্রিকার শিরোনাম, ডলার সংকট তীব্র, বিদেশী ঋণ পরিশোধে দুশ্চিন্তা। এই খবরটিতে বলা হচ্ছে, বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, এর অন্যতম কারণ হলো ডলারের সংকট। দীর্ঘদিন ধরেই ডলারের সংকট থাকলেও বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে ডলারের সংকট প্রবল আকার ধারণ করেছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলার মিলছে না বললেই চলে। অন্যদিকে কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারেও ডলার বেচাকেনা একেবারেই কম। আর থাকলেও দাম বেশি।
ডলারের এই সংকটকালে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতকে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রায় ১২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসা এবং ডলার সংকটের কারণে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যাংকখাত নিয়ে সমকাল পত্রিকার শিরোনাম, ব্যাংক খাতে অস্বস্তি বাড়ছে। এতে বলা হচ্ছে, ডলার সংকটের মধ্যে ব্যাংক খাতে চলছে টাকার টানাটানি। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে অনেক ব্যাংক নিয়মিত ধার করছে। এরপরও কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিধিবদ্ধ নগদ জমা রাখতে পারছে না। এই সংকটের মূলে রয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আস্থাহীনতা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত অনুযায়ী খেলাপি ঋণ কমানো ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিয়ে চাপে রয়েছে ব্যাংক খাত।
এমন সময়ে একের পর এক পদত্যাগ করছেন বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিরা। এ নয়ে ব্যাংক খাতে তৈরি হয়েছে নতুন অস্বস্তি।