জাতীয়

অল্প টাকায় একবেলা পেট পুরে মাংস খাওয়ায় ‘হোটেল আল ঘিরাদিয়া’

মোহনা অনলাইন

সপ্তাহের প্রতি রবি ও বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের তিলকপুরে হাট বসে। এ দুই দিন কম দামে গরুর ভুনা মাংস ও ভাত বিক্রি করে তিনি আয় করেন লক্ষাধিক টাকা। অল্প টাকায় একবেলা পেট পুরে গরুর মাংস খেতে এখানেই ভিড় জমান নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চারদিকে পরদাঘেরা চাকচিক্যহীন একটি হোটেল। কাপড় দিয়ে ঘেরা থাকায় এটির নামও ‘হোটেল আল ঘিরাদিয়া’। এর মালিক আজিজুল ইসলাম; নওগাঁ সদরের ধোপায়কুড়ি গ্রামের প্রয়াত রইস উদ্দিনের ছেলে।

হোটেলটির সুনাম জেলাজুড়ে। গরিবের কাছে খাবারের দাম কম রাখেন। অনেককে আবার বিনামূল্যেও ভাত-মাংস খাওয়ান।

জেলার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন থেকে উত্তরে ১০ কিলোমিটার গেলেই তিলকপুর হাট। সপ্তাহে দুদিন রবি ও বৃহস্পতিবার হাটবারে সকাল সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলে আজিজুলের এ হোটেলটি।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর ) সরেজমিনে দেখা গেছে, ডেকোরেটরের মতো কাপড় দিয়ে ঘেরা হোটেলের চারপাশ। ভেতরে কোনো রকম চেয়ার-টেবিল পাতা। চুলায় রান্না করা এক পাতিল গরুর ভুনা মাংস, পাশে অন্য পাতিলে ভাত। একটু দূরে গ্যাসের চুলায় তৈরি হচ্ছে আটার রুটি। ভোজন রসিকরা এসে কেউ গরুর ভুনা মাংস দিয়ে রুটি, কেউ আবার ভাত খাচ্ছেন। অনেকেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে খেতে ভুনা মাংস কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।

আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘২০০০ সাল থেকে হোটেলটি চালাচ্ছি। প্রথম দিকে ৭ থেকে ১০ কেজি মাংস আর ২০ কেজি চাল রান্না করতাম। আটার রুটি বানাতাম দুই কেজি। এক যুগ আগে গরুর মাংসের চাহিদা বাড়তে থাকে। দূর-দূরান্তের মানুষ ভুনা মাংস খেতে আমার হোটেলে ভিড় করতে শুরু করেন। তখন প্রতি হাটবারে এক থেকে দুই মণ মাংস রান্না করেছি। এখন কোনো হাটে তিন মণ, আবার কখনো সাড়ে তিন মণ মাংস রান্না হয়।’

তিনি আরও বলেন, এখন গরুর মাংস পুরো প্লেট ২২০ টাকা, আর অর্ধেক প্লেট ১২০ টাকা বিক্রি করি। প্রতি হাটবারে লক্ষাধিক টাকা আয় হয়।

কথা বলার ফাঁকেই দেখা গেল, আদমদীঘি উপজেলার শাওল বাজারের সুতা ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বাড়ি থেকে বাটি নিয়ে এসেছেন গরুর ভুনা মাংস কিনতে।

আজিজুলের হোটেল নিয়ে কথা হয় তিলকপুর হাটের ইজারাদার বাবলু হোসেনের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘প্রতি হাটবারে আজিজুলের হোটেলে অনেক মানুষ গরুর ভুনা মাংস ও ভাত খেতে আসেন। সিরিয়াল পড়ে যায়। সপ্তাহের দুদিনে আজিজুল যে পরিমাণ গরুর ভুনা মাংস বিক্রি করেন, অনেক হোটেলে পুরো মাসেও তা বিক্রি হয় না।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button