নিজের দপ্তরে আসা সরকারি কাজ বাগাতে স্ত্রীকে দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খোলা সেই আলোচিত নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিবকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
স্ত্রীর করা প্রতারণা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটি। গতকাল গ্রেপ্তারের পরই তাকে নোয়াখালী সুধারাম থানায় হস্তান্তর করা হয়। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহিদুল হক রনি জানান, প্রকৌশলী আহসান হাবিবকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের ওয়ারেন্ট জারি করে।
এর আগে দুইবার একই মামলায় সমন জারি করলেও আদালতে উপস্থিত হয়নি নোয়াখালী জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব। তৃতীয় স্ত্রী ডাক্তার সুমনার অভিযোগ, পূর্বে আহসান হাবিবের একাধিক বিয়ে থাকলেও তা গোপন করে প্রতারনা মূলক ভাবে তাকে বিয়ে করেন। শুধু তাই নয়, সুপীয় পানি নিশ্চিতে ২০২০ সালে সরকারের গভীর নলকূপ প্রকল্পের একটি কাজ বাগাতে নেত্রকোনায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সুমনাকে দিয়ে বাসুকা করপোরেশন নামে একটি টিকাদারি প্রতিষ্ঠানও খোলেন এ কর্মকর্তা। পরে নিজেই নিজের প্রতিষ্ঠানকে কাজ বরাদ্দ দেন। সুমনা জানান, তাকে একটি কাগজে সিগনেচার করতে বলা হয়েছিলো, পরে জেনেছে তার নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ঐ দস্তখত নেওয়া হয়।
সুমনা আরও বলেন, তার অনৈতিক কার্যকলাপ বুঝে উঠার পর থেকেই শুরু হয় সাংসারিক ঝামেলা। বর্তমানে সে আমাকে এবং আমার ১৪ মাসের কণ্যা সন্তানের স্বীকৃতিও দিচ্ছে না। এছাড়াও বিভিন্ন সময় আহসান হাবীব তার বাসায় লোকজন পাঠিয়ে হত্যার হুমকিও দেন বলে জানান এ ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক। এর আগে, ২০২১ সালে দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় ১৪ মাস অব্যাহতিতে ছিলেন এই প্রকৌশলী।
পাবনায় কর্মরত অবস্থায় দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন পাবনার ঠিকাদাররা। নারী কেলেঙ্কারির কথাও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। তার গ্রেপ্তারের বিষয়ে, নোয়াখালী সুধারাম মডেল থানার ওসি জাহিদুল হক রনি বলেন, ঢাকা কোর্টের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় ঢাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। আহসান হাবিবের কর্মস্থল নোয়াখালীর ঠিকানায় দেওয়াতে তাকে রাতেই আমাদের থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।