জাতীয়

‘ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার’ স্থাপন রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ

মোহনা অনলাইন

সরকারি-বেসরকারি কর্মস্থল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিমানবন্দর, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, শপিংমলসহ সরকার নিয়ন্ত্রিত, পরিচালিত ও ব্যবস্থাপনায় বিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। এবার সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের বিচারপতিদের সইয়ের পর ছয় পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করা হয় বলে জাগোনিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান।

জনস্বার্থে দায়ের করা এই রিটের রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, শিশুদের মাতৃদুগ্ধ পানের বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ। এটা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই যে, একটি শিশুর জন্মের পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত তার মাতৃদুগ্ধ প্রয়োজন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় মায়েরা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং রুমের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। শপিং মল, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, লঞ্চ ঘাটসহ সকল পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং রুম থাকা প্রয়োজন যাতে সব মা তার শিশুদের মাতৃদুগ্ধের ব্যবস্থা করতে পারেন।

সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ দ্রুততম যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং রুম স্থাপনের সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও রায়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন হাইকোর্ট।

এর আগে রায় ঘোষণার পর আইনজীবী ইশরাত হাসান জাগো নিউজকে বলেন, মা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে রুল, নির্দেশনাগুলো ও চূড়ান্ত শুনানির পর হাইকোর্ট এই যুগান্তকারী রায় দিলেন। আমাদের সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে স্বীকৃত অন্যতম মৌলিক অধিকারবিষয়ক এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক রায়।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দেশের সব কর্মক্ষেত্র, এয়ারপোর্ট, বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনে, শপিং মলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এছাড়াও পাবলিক প্লেস ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে নীতিমালা তৈরি করতে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না রুলে তাও জানতে চান আদালত।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব রুল জারি করেন।

চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এসব রুলে জবাব দিতে বলা হয়।

পরে এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ২ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন মো. রাশিদুল হাসান, অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর নিরাপদ পরিবেশে ও স্বাচ্ছন্দ্যে মায়ের বুকের দুধ পান করতে ৯ মাসের শিশু উমাইর বিন সাদিকের পক্ষে তার মা ইশরাত হাসান এই রিট দায়ের করেন।

 

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button