খুলনাসংবাদ সারাদেশ

এটিএম বুথে পাঁচ টাকার কয়েন দিলেই পাওয়া যাবে ২০লিটার বিশুদ্ধ পানি

সবুজ হাওলাদার

লবণ অধ্যুষিত উপকূলের মোংলায় বিশুদ্ধ খাবার পানির হাহাকার দীর্ঘদিনের। এখানকার বাসিন্দাদের কাছে যেন তা সোনার হরিণ। দূর দূরান্ত থেকে মিষ্টি পানি এনে জীবন বাঁচানোও যেন রীতিমত যুদ্ধ। সেই অসহনীয় দুর্ভোগের কিছুটা মুক্তি মিলবে এবার। তাদের জন্য অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে এটিএম বুথে পাঁচ টাকার কয়েন দিলেই পাওয়া যাবে ২০লিটার বিশুদ্ধ সুপেয় মিষ্টি পানি।
এক টাকার কয়েনে চার লিটার, আর দুই টাকার কয়েনে আট লিটার মিষ্টি পানির এই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেড (রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ)।
বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট পৌরসভায় একটি, এ উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নে চারটি ও রামপাল উপজেলার হুড়কা, গৌরম্ভা ও রাজনগর ইউনিয়নে ছয়টি মিলে মোট ১১টি স্থানের মধ্যে বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নে তিনটি, রাজনগরে দুটি ও গৌরম্ভা ইউনিয়নে দুইটি স্থানে এখানকার বাসিন্দারা এটিএম বুথ পদ্ধতির মাধ্যমে এই মিষ্টি পানির সুবিধা ভোগ করবেন। এছাড়া বাকীগুলোতে রিভার অসমোসিস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে মিষ্টি পানি পাবেন।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে এটিএম সেবা উদ্ধোধন করেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ায় কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান মহা-ব্যবস্থাপক শান্তনু কুমার মিশ্র, মহা-ব্যবস্থাপক মঙ্গলা হারির্নান, উপ- ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম, ব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম, মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমানসহ স্থানীয় অতিথিরা।
২কোটি ২০লাখ টাকা ব্যয়ে বিশুদ্ধ পানির এসব প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ায় কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম বলেন, মিষ্টি পানি এই এলাকার একটি প্রধান সমস্যা। সে সমস্যা নিরসনে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লবণ অধ্যুষিত এখানকার কয়েক হাজার পরিবারের মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এখন তারা দীর্ঘদিনের বিশুদ্ধ পানির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে।
এছাড়া এই এলাকায় পিছিয়ে পড়া সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য ফ্রি শিক্ষা, চিকিৎসাসহ আর্থ সামজিক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। কয়লা ভিত্তিক রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রও পরিচালনা করছে তারা।
এদিকে মিষ্টি পানির সু-ব্যবস্থা পেয়ে বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা করিম ফকির, নারায়ণ বিশ্বাস ও বিজলি সরকার বলেন, আমাদের যে উপকার হলো, তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এতদিন খালের লোনা পানি ফিটকিরি দিয়ে ও দূর দূরান্ত থেকে মিষ্টি পানি এনে জীবন বাঁচিয়েছি। রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ আমরা।
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button