মেহেরপুরে সুপেয় পানির ৫৫টি প্লান্টের ৫২টি নষ্ট, বাধ্য হয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান
ফারুক আহমেদ
মেহেরপুরে সুপেয় পানির ৫৫টি প্লান্টের মধ্যে ৫২টি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে এলাকাবাসী। একারণে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বেসরকারী সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন কর্তৃপক্ষ প্লান্টগুলো নির্মাণ করে কিন্তু তাদের কার্যক্রম মেহেরপুর থেকে তুলে নেওয়ায় রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে প্লান্টগুলো অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। দ্রত সময়ের মধ্যে প্লান্টগুলো চালু করার দাবি স্থানীয়দের।
মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার অন্তত ৩০টি গ্রামেই রয়েছে আর্সেনিকের আধিপত্য। নিরাপদ পানি না পেয়ে নিরুপায় হয়েই বছরের পর বছর আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করায় আর্সেনিক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে আক্রান্ত রোগীদের দুর্বিষহ জীবনে মানবতার চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে, সামাজিক জীবনযাত্রাও থমকে গেছে। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছেন তারা।
২০১৫-২০১৬ সালে আর্সেনিক থেকে বাঁচতে সুপেয় পানির জন্য বেসরকারী সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন ৫২ আর সরকারী ভাবে ৩টি প্লান্ট নির্মান করা হয়। কিন্তুু মেহেরপুরে বেসরকারী সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন এর কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। একারণে রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে প্লান্টগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। পাইপে ধরেছে মরিচা। প্লান্টগুলোতে জং ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। রাতের আঁধারে চুরি হয়ে গেছে অনেক যন্ত্রাংশ।
মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর তারানগর, মেহেরপুর সদর উপজেলার আলমপুর, আমঝুপি, বেলতলাপাড়া ও গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা,মানিকদিয়া ও তেঁতুলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়ার পর সরকারি/বেসরকারিভাবে টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা, আর্সেনিকমুক্ত পানি পানের জন্য সচেনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। বর্তমানে রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে প্লান্টগুলো অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে।
স্থানীয় একজন বলেন, পানির প্লান্টটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করছি। এটা মেরামত করলে আবার সুপেয় পানি পান করতে পারতাম। আরেকজন বলেন, এই পানির প্লান্ট থেকে আর্সেনক মুক্ত পানি পান করে এলাকার মানুষ সুস্থ ছিলো। কিন্তু এটা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকে।
আরেক স্থানীয় বলেন, আগে আসের্নিক যুক্ত পানি পান করাতাম কিন্তুু প্লান্টটি তৈরি করার পর সুপেয় পানি পাওয়া যেত। বর্তমানে এটি নষ্ট একারণে আবার আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে। আরেকজন বলেন, পানির প্লান্ট বসানোর পর এলাকার লোকজনের উপকার হয়েছিলো। পানি বাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেয়েছিলো। কিন্তুু প্লান্টটি নষ্ট হওয়ায় আগের মত আর্সেনিক পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে সবাই।
এদিকে, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন প্লান্টগুলো চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন।