অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বাংলাদেশে ব্যক্তির ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। এর মধ্যেই জানা গেছে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে দেশের গণমাধ্যমের ওপরও।
তবে মুক্ত মতপ্রকাশের যুগে গণমাধ্যমের ওপর আদৌ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায় কি না, এ নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রশ্নের উদয় হয়েছে।
কী অভিযোগে এবং কী ধরনের মত প্রকাশ করলে একটি গণমাধ্যম মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে, তা নিয়েও শুরু হয়েছে গবেষণা। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, দূর অতীতে নয়, গেলো বছরই তিন দেশের গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গণমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল, বল প্রয়োগ, প্রপাগান্ডা ছড়ানো ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশসহ বিভিন্ন অভিযোগে এই নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে এসেছিলো।
২০০২ সালে হিজাব আন্দোলনের পুরোধা মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিংয়ের (আইআরআইবি) ছয় কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন। আইআরআইবি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, বিক্ষোভে নিহতদের পরিবারকে হয়রানি এবং মৃত্যুর কারণ লুকানোর চেষ্টা করেছিল ওই গণমাধ্যম। নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে ওই ছয় কর্মকর্তার বিদেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে তাদের প্রবেশ, বিনিয়োগ কিংবা ব্যবসা পুরোপরিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়।
ইরান সরকারের পক্ষে প্রপাগান্ডার অভিযোগ তুলে ওই একই বছর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় ইরানের সংবাদমাধ্যম ফার্স ও তাসনিম নিউজ এজেন্সির ওপরও। এই দুটি গণমাধ্যমের কর্তাব্যক্তিরাও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ, বিনিয়োগ কিংবা ব্যবসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন এবং বিদেশে থাকা তাদের সম্পদ জব্দ করা হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয় বাইডেন সরকার। এর মধ্যে ছিল ক্রেমলিনভিত্তিক গণমাধ্যম চ্যানেল ওয়ান, রাশিয়া ওয়ান এবং এনটিভি। এসব চ্যানেলে প্রতি বছর প্রায় ৩০ কোটি ডলারের বিজ্ঞাপন দিতো যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর অর্থের এই লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
একই বছর ভুয়া সংবাদ প্রচারের ভয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আলবেনিয়ার টিভি চ্যানেল ওরা নিউজ, আরটিভি ও চ্যানেল ওয়ানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।