ভারতে হিমবাহ হ্রদ ধসে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। এই দুর্যোগে এখনও অন্তত ১০২ জন নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া ২২ সেনাসদস্যও নিখোঁজের কবর পাওয়া গেছে। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়কে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে সিকিম সরকার। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে আসে এ তথ্য।
স্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আকস্মিক বন্যায় সিকিমে ১৪টি সেতু ধসে পড়েছে। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন অংশে তিন হাজারের বেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোরে সিকিমে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। এতে রাজ্যটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লোনাক হ্রদের পানি বেড়ে গিয়ে তিস্তায় এসে পড়লে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পাশাপাশি রাজ্যের চানথাং বাঁধের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিলে তিস্তা নদীর ভাটিতে পানির উচ্চতা ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের অধীন সিকিম সরকার এই বিপর্যয়কে একটি দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এদিকে আকস্মিক বন্যায় সিকিমের বিভিন্ন এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।
দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের অতিরিক্ত ৩টি প্লাটুন মোতায়েনের জন্য অনুরোধ জানালে, তা অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সার্বিক খোঁজ-খবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজ্য সরকারকে সহায়তার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, তিস্তার ভয়াল রূপ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জারি করা হয়েছে সতর্কতা। পানির চাপ সামাল দিতে তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ থেকে বুধবার সকাল থেকেই বাংলাদেশের দিকে পানি ছাড়ে ভারত। এতে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় তিস্তা পাড়ের মানুষ।