আন্তর্জাতিক

গাজায় ত্রাণ পাঠাতে রাজি মিশর

মোহনা অনলাইন

গাজায় ত্রাণ নেওয়ার সুযোগ দিতে ইসরায়েল রাজি হওয়ার পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় ২০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে মিসর। দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল–সিসির সঙ্গে কথা বলার পর গতকাল বুধবার রাতে এ তথ্য জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তবে এই ত্রাণ পাঠাতে শুক্রবার হয়ে যেতে পারে। কারণ, গাজার সঙ্গে মিশরের রাফাহ সীমান্তের রাস্তা মেরামত করতে হবে।

গত ৭ অক্টোবর হামাস আক্রমণ করার পর ইসরায়েল সেখানে জল, ওষুধ ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

ইসরায়েলে সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে দেশে ফেরার সময় বাইডেন বলেছেন, ”এই ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেয়ার জন্য সিসিকে ধন্যবাদ দিতেই হবে।” তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ”হামাস যদি এই ত্রাণসামগ্রী কেড়ে নেয় বা যেতে না দেয়, তাহলে এভাবে আর কোনো ত্রাণ পাঠানো হবে না।”

সিসি জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি গাজা থেকে খুব বেশি বাস্তুচ্যূতকে সীমান্ত পেরিয়ে আসতে দেবেন না। তাহলে তা নজির হয়ে থাকবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, ”গাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সবদিক থেকে সহিংসতা বন্ধ হওয়া দরকার।”

গাজার হাসপাতালে বিস্ফোরণ ও প্রচুর মানুষের মৃত্যু প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে বলেছেন, ”আমি যা দেখেছি, তার ভিত্তিতে বলতে পারি, আপনারা নন, অন্যরা এই কাজ করেছে।” বাইডেন জেহাদিদের এর জন্য দায়ী করে বলেছেন, তাদের রকেট হাসপাতালে ভেঙে পড়েছে।

ইসরায়েলের সেনা দাবি করেছে, এই বিস্ফোরণের পিছনে আইএস আছে। তাদের রকেট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে হাসপাতালের উপর পড়েছে। তবে লন্ডনের কিংস কলেজের সমরিক বিশেষজ্ঞ ম্যারিনা মিরন বলেছেন, ”হাসপাতালে বিস্ফোরণের পিছনে কারা দায়ী তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন।”

তিনি জানিয়েছেন, ”আরো তথ্য দরকার। রকেট লঞ্চ সাইটও পরীক্ষা করে দেখতে হবে। নাহলে এটা বলা সম্ভব নয়।”

বেলিংগক্যাট ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম গ্রুপের গবেষণা ও প্রশিক্ষণের ডিরেক্টর ফিওরেলা জানিয়েছেন, ”আমরা এখনো এমন কোনো তথ্য পাইনি যার ভিত্তিতে বলতে পারি, কোনো একপক্ষ দায়ী।”

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দুই পক্ষই আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে। আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের বিশেষজ্ঞ সের্গেই ভ্যাসিলিয়েভ বলেছেন, ”লড়াইয়ের কিছু নিয়ম আছে। সব পক্ষকে সেই নিয়ম মেনে চলতে হয়। তাহলেই বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়।”

ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডেমক্রেসির আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক টম ড্যানেনবাউম ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ”দুই পক্ষই নিয়ম ভেঙেছে। গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখা মানে, সেখানকার মানুষ অনাহারে থাকবেন। এটা যুদ্ধাপরাধ। আবার হামাস যেভাবে বেসামরিক মানুষকে মেরেছে, পণবন্দি করেছে, অত্যাচার করেছে, সেটাও যুদ্ধাপরাধ।”

দুই বিশেষজ্ঞ বলেছেন, দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বৃহস্পতিবার ইসরায়েল যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলবেন।

সুনাক জানিয়েছেন, ”প্রতিটি বেসামরিক মানুষের মৃত্যু খুবই দুঃখের। এই সংঘাতে প্রচুর বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন।”

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button