ক্রাশ ডায়েট ছেড়ে পুষ্টিকর খাবার খেয়ে সুস্থ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন নিউট্রিশনিস্টরা। আদর্শ ডায়েটে প্রোটিন, ফল, শাক-সবজি, বাদাম রাখার কথা বলেন তারা। সেই সঙ্গেই প্রয়োজন পর্যাপ্ত জল। তবে জানেন কি এই সব কিছুই বেশি খেলে হতে পারে হিতে বিপরীত ফল?
আপনি কি জানেন, স্বাস্থ্যকর খাবার অতিরিক্ত খেলে তা জাঙ্ক ফুডের মতোই বিপজ্জনক হতে পারে? বলা হয়ে থাকে, অতিরিক্ত সবকিছুই খারাপ। এর অর্থ হলো স্বাস্থ্যকর খাবারও অতিরিক্ত খেলে তা আপনার শরীরের বিভিন্ন ক্ষতির কারণ হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবার কীভাবে চিনবেন? যে খাবারটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, তাকেই স্বাস্থ্যকর খাবার বলা হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর খাবার, এমনকী কম ক্যালোরির খাবার অতিরিক্ত খাওয়া হলে তা বাড়তি ক্যালোরি যোগ করতে থাকে। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যায়। স্বাস্থ্যকর বলেই যে বেশি খেলে বেশি উপকার পাবেন, এমনটা নয়। যে খাবারই হোক না কেন, কতটুকু খাওয়া যাবে তা জানা আপনার জন্য জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক স্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খেলে কী ক্ষতি হয়-
পানি:
সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত হাইড্রেশন জরুরি। তবে অতিরিক্ত পানি পান করলে তা শরীরের সোডিয়ামের মাত্রাকে পাতলা করে এবং কোষের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। কম সোডিয়ামের মাত্রার কারণে কোষে পানি ঢুকতে পারে যার ফলে মস্তিষ্ক ফুলে যায়। তাই যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই পানি পান করুন। পানি বেশি পান করার মানেই যে তা উপকারী, তা কিন্তু নয়। কিন্তু অতিরিক্ত পানি খেলে শরীরে সোডিয়ামের ঘনত্ব কমে যায়। কোষের কার্যকারিতাও বাধা পায়। মস্তিষ্কে প্রদাহ হতে পারে।
ফল:
ফলমূল সুস্বাদু এবং অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এতে অনেক ধরনের ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যালের উপস্থিতি থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণে কলা, খেজুর, আনারস, আম, আঙুরের মতো হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত ফল বেশি খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যেকোনো ফল শুধুমাত্র পরিমিতভাবে খাওয়া হলেই বিভিন্ন স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমায়।
বাদাম:
বাদাম সম্প্রতি সুপারফুডের খ্যাতি অর্জন করেছে। এর অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। হাই প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকার কারণে বাদাম অন্যতম পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু প্যাকেজড বাদাম বেশি খেলে বিপদ। অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকার কারণে তা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। আমন্ড, আখোরট, কিসমিস, পেস্তা মিশিয়ে একমুঠো বাদামই রোজ যথেষ্ট।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার:
শরীরের কোষ, কলা ও হরমোন তৈরির জন্য প্রোটিন সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে পৌষ্টিকতন্ত্র ও কিডনির ওপর চাপ পড়ে। ফলে রক্তে নাইট্রোজেন বর্জ্য জমা হতে থাকে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারকে টিস্যু, কোষ এবং হরমোনের বিল্ডিং ব্লক হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যা ছাড়া শরীর কাজ করতে পারে না।