সংবাদ সারাদেশ
মামলার ভয় দেখিয়ে লাকড়ি ভর্তি গাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে!
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর)
গাজীপুরের শ্রীপুরে মামলার ভয় দেখিয়ে এক কৃষকের লাকড়ি ভর্তি পিক-আপ থেকে দুই হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর জেলা পুলিশের ২ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই কৃষক তাদের বিচার চেয়ে মহা-পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বরাবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে শুক্রবার (০৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার (ইউটার্নে) এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ২জন পুলিশ হলেন, গাজীপুর জেলা পুলিশের সার্জেন্ট মেহেদী (৪২) এবং আতাউর রহমান (৪৫)।
ভুক্তভোগী কৃষক গিয়াস উদ্দিন সরকার (৪৫) শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের গোদারচালা গ্রামের মৃত মালেক সরকারের ছেলে।
কৃষক গিয়াস উদ্দিন সরকার এবং মহা-পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বরাবার লিখিত অভিযোগে জানান, শুক্রবার সকালে তিনি উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বলদীঘাট এলাকা থেকে লাকড়ি কিনে পিকআপ ভাড়া করে নিজ বাড়ীতে (গোদারচালা) আসছিলেন। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার (ইউটার্নে) পৌছলে ওই স্থানে দায়িত্বরত গাজীপুর জেলা পুলিশের সার্জেন্ট মেহেদী এবং আতাউর রহমান সিগনাল দিয়ে তার পিকআপের গতিরোধ করে। এসময় পুলিশ সদস্যরা পিকআপের কাগজপত্র যাচাই করে সঠিক পাওয়া গেলে অভিযুক্ত সার্জেন্ট মেহেদী ও তার সহযোগী কৃষকের কাছে দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত টাকা না দিলে লাকড়ি নিতে দিবে না বলে জানায়। কেন তাদেরকে (পুলিশ সদস্য) চাঁদা দিতে হবে জিজ্ঞাসা করলে তারা কৃষক গিয়াস উদ্দিন সরকারকে বলে মহাসড়ক দিয়ে লাকড়ি নিলে গেলে আমাদেরকে দুই হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। তাদেরকে টাকা দিতে রাজি না হলে তারা কৃষককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়। পরে ওই কৃষক তাদেরকে (পুলিশ সদস্যকে) দুই হাজার টাকা চাঁদা দিলে তারা লাকড়ি বহনকারী পিকআপ ছেড়ে দেয়।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে আমি জানতে পারি জেলা পুলিশের ওই দুই সদস্য প্রায় সময় মহাসড়কের ওই স্থানে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষকে অযথায় হয়রানী করে আসছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বরাবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গোপালগঞ্জে ডিউটিতে আছেন জানিয়ে এ বিষয়ে অভিযুক্ত সার্জেন্ট মেহেদী মুঠোফোনে জানান, “আমরা সড়কে নিয়মিতই গাড়ি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করি। সেদিন ১০-১২ টি গাড়ি ধরা হয়েছিল। সাংবাদিক ও নেতাদের ফোন এবং রিকোয়েস্ট কয়েকটি ছেড়ে দিয়েছি। আমরা কোনো টাকা গ্রহন করিনি। যারা রিকোয়েস্ট করেছিল তারা কি টাকা নিয়েছে কিনা তা জানা নেই। তিনি আরও বলেন, সে ঘটনার ভিডিও আছে। আমি এসে আপনাকে দেখাতে পারবো। আর হাসানসহ কয়েকজন সাংবাদিক তো আমাদের এখানে নিয়মিতই বসে। তাদেরও পরিচিত লোকজন থাকে। বললে আমরা সম্মান দিয়ে কিছু গাড়ি ছেড়ে দেই। গতকালও এক সাংবাদিক এ বিষয়টা নিয়ে আমার কাছে বলেছিলো”।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী শফিকুল আলম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, “এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমাদের এখানে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তের পর যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।