পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরহ দেশি-বিদেশি জাহাজে দক্ষ নাবিক-ক্রু তৈরি করতে মাদারীপুরে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় ও সর্ববৃহৎ ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যাঞ্চল মাদারীপুর হওয়ায় সরাসরি কয়েকটি জেলার মানুষ এ সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি এখানে নির্মাণ করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে প্রতি বছর ৬০০ বেকার যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। রয়েছে সরকারিভাবে দেশি-বিদেশি জাহাজে চাকরির সুযোগও। এরই মধ্যে শতভাগ কাজ শেষও হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।
জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের এওজ গ্রামে ৬-তলা ভবনটি নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ৮টি প্রকল্পে শুরু হওয়া কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ স্টেশন, ফায়ার ফাইটিং ব্লক নির্মাণ, লাইফ বোট জেটি, প্রশিক্ষণ পুকুর, এলটি ফিডার কেবল, সোলার প্যানেল, মসজিদ, শহীদ মিনার নির্মাণসহ একাধিক কাজ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় এত সুন্দর একটি প্রতিষ্ঠান হয়েছে যা কল্পনার বাহির ছিল। এটা চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। আমরা চাই এটি দ্রুত চালু হোক।
সেন্টু খাঁ নামে একজন বলেন, এটি চালু হলে এ এলাকা ও তার আশপাশের বেকাররা প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারবে। এটি বেকারত্ব দূর হবে, পাশাপাশি বিদেশের জাহাজে চাকরি করতে পারলে দেশের রেমিট্যান্সও বাড়বে। এটি চালু দ্রুত করার দাবি জানাচ্ছি।
বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম জানান, আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের সব কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মো. আতাউর রহমান জানান, এনএমআইটি চালুর লক্ষ্যে অধ্যক্ষ, উপাধ্যাক্ষ, বিভাগীয় প্রধান, হিসাবরক্ষকসহ ৭৩টি ক্যাটাগরিতে ১৮৭ জন জনবলের আবেদন চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এটি দেশের দ্বিতীয় ও সর্ববৃহৎ এ প্রতিষ্ঠান। এটি চালু হলে একদিকে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। অন্যদিকে দেশের রেমিট্যান্স বাড়াতে কাজ করবে।
সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান জানান, প্রশিক্ষণ শেষে যুবক-যুবতীদের দেশি-বিদেশি জাহাজে কাজের সুযোগ করে দেবে সরকার। প্রতিষ্ঠানটিতে আবাসিক ও অনাবাসিক এ দুই ধরনেরই সুবিধা রয়েছে।