মনগড়া, অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য পরিবেশন করে খবর প্রচার করায় দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের পক্ষে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) এই আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।
সম্প্রতি মুশফিকের অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড ইস্যুকে ফিক্সিংয়ের সাথে তুলনা করে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয় দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার মুশফিকের পক্ষ থেকে ঐ টিভি চ্যানেলকে আইনি নোটিশ পাঠানো হলো।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজ চলাকালীন গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ডকে কেন্দ্র করে ‘মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ! সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ৭১ টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান খেলাযোগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে প্রচার করা হয়। সেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের আউট নিয়ে মনগড়া, অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য পরিবেশন করে তার দীর্ঘ ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ওপর কালিমা লেপন করা হয়েছে এবং তার সুনাম ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।’
মুশফিক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন দাবি করে আইনি নোটিশে লেখা হয়েছে, ‘প্রতিবেদনটি এমন সময়ে করা হয়েছে যখন বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট চলমান। উক্ত প্রতিবেদনের কারণে মুশফিকুর রহিম পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে সুনাম ক্ষুণ্ণ শিকার হয়েছেন এবং তিনি এই বিকৃত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের কারণে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সময় পার করেছেন।’
আইনি নোটিশে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে।
১. অতিসত্ত্বর ইউটিউবসহ অন্যান্য প্লাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলতে ও সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
২. ভুল ও অসত্য এবং মানহানিকর তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের জন্য ৭১ টেলিভিশনকে নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনাসহ তাদের টিভি চ্যানেলে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচার করতে বলা হয়েছে।
৩. ৭১ টেলিভিশনকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের এই মনগড়া, ভুল প্রতিবেদনের জন্য নি:শর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
৪. সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক সাইফুল রূপককে ভবিষ্যতে এমন অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে মর্মে মুশফিকুর রহিমের নিকট লিখিত ভাবে ৭১ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।
যথাযথ জবাব না পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে নোটিশে। সেখানে লেখা আছে, ‘উক্ত প্রতিবেদন দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ২৫(১) (ক), ২৫(২) এবং ২৯ ধারায় সাইবার বুলিং এর অপরাধ উল্লেখ করে প্রতিকার না পেলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের দেওয়ানী আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’