ভারতে আবারও করোনার তীব্র সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দেশটির কেরালা রাজ্যে ডিসেম্বরের প্রথম ১০ দিনে ৮২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে এক ব্যক্তি মারাও গেছেন করোনা সংক্রমিত হয়ে। এ বিষয়েটি নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে।
কেরালা রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর কোভিডে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা সবাইকে সতর্কও করেছে। এছাড়া স্বাস্থ্য কর্মীদের সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেরালার কান্নুর জেলার পানুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে করোনায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। মৃতের নাম পালাক্কান্ডি আবদুল্লাহ। বয়স ৮২ বছর। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি।
ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এরপর করোনা নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন স্থানীয় বিধায়ক কেপি মোহনন। সম্প্রতি কেরালায় হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড সংক্রমণ। সরকারি হিসাব বলছে, নভেম্বরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭০ জন। ডিসেম্বরের প্রথম ১০ দিনে সে রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২৫ জন।
রাজ্য হাসপাতালের মেডিকেল সুপার সাপি পি ওরাথেল জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের পরীক্ষা করে কোভিড ধরা পড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের এইচ১এন১ পরীক্ষা করে রিপোর্ট পজিটিভ আসেনি। তবে করোনা ধরা পড়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে এক মাস বা তার বেশি সময় ধরে কোভিডের উপসর্গ দেখা গেছে। ওই চিকিৎসকের কথায়, ‘‘এখন আমরা লক্ষ্য করছি, কোভিডের থেকেও দূষণ এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এই উপসর্গগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে।’’
বিশেষজ্ঞেরা এ-ও জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও উপসর্গ গুরুতর নয়। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। তবে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা যাদের অন্য অসুখ রয়েছে (কোমর্বিডি), তাদের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর হতে পারে।
ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ (আইএলএসএসিওজি) বলছে, কেরালায় জেএন.১ প্রজাতির অস্তিত্ব মিলেছে। সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশেও মিলেছে এই প্রজাতি। এটা করোনা ভাইরাসের বিএ.২.৮৬ ওমিক্রন প্রজাতির একটি উপপ্রজাতি। গত অগস্টে লাক্সেমবার্গে প্রথম এই উপজাতির দেখা মিলেছে। বিএ.২.৮৬ প্রজাতির অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়েছিল গত জুলাই মাসে ডেনমার্কে।