মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি টঙ্গী স্টেশনে থামেনি। থেমেছিল ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে। এর আগে ট্রেনটির স্টপেজ ছিল গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ জংশনে। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছাতে সময়ের হিসাবে দূরত্ব ১৮ মিনিটের।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের পর জানা যায়, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছাতে সময়ের হিসাবে দূরত্ব ১৮ মিনিটের। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনটিতে আগুন দেখা যায়নি। কিন্তু তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছার আগে টের পাওয়া যায় ট্রেনে আগুন লেগেছে। এ থেকে বোঝা যায়, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হওয়ার পর সৈনিক ক্লাবের আগে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার গোলাম সবুর বলেন, উত্তরা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন কাউকে শনাক্ত করা যায়নি, চেষ্টা চলছে। গুলশান গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, আগুন কোন এলাকায় লাগানো হয়েছে তার সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে সিসিটিভি ফুটেজে।
তিনি বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পর্যন্ত আমরা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে কোনো আগুন বা ধোঁয়ার আলামত পাইনি। তবে, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হওয়ার পর সৈনিক ক্লাব এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে আগুনের আলামত স্পষ্ট দেখা গেছে।’
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, সৈনিক ক্লাব এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের পর এটি স্পষ্ট মনে হয়েছে যে, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে উঠে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হওয়ার পর আগুন দেওয়া হয় ট্রেনটিতে। কারণ সৈনিক ক্লাবের আগের কোনো সিসিটিভিতে আমরা ট্রেনটিতে আগুন কিংবা ধোঁয়ার আলামত দেখতে পাইনি। এ ছাড়া, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই ট্রেনটি স্টেশন ত্যাগ করে।
তিনি বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে, বিমানবন্দরে দুজন নেমে যাওয়ার পরপরই আগুন দেখা যায়। তার মানে, তারা আগুন দিয়ে বিমানবন্দরে নেমে গেছেন। এটি আসলে সঠিক নয়। কারণ, বিমানবন্দর থেকে মহাখালী বা তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছার দূরত্ব ১৮ মিনিট। আগুন ১৮ মিনিট আগে লাগলে পুরো ট্রেন পুড়ে ছাই হয়ে যেত।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের আগে ট্রেনটির যাত্রাবিরতির স্টেশন ছিল গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ জংশনে। টঙ্গীতেও ট্রেনটি থামেনি। আর বাইরে থেকে দেখার সুযোগও নেই যে কেউ আগুন লাগাচ্ছে কি না। আমাদের ধারণা স্পষ্ট, আগুন বিমানবন্দর স্টেশনে দেওয়া হয়নি। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের পর আগুন দেওয়া হয়। আমরা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মাস্টার, লাইনম্যান, সিগন্যালম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা ক্লিয়ার পাস দিয়েছেন। তারাও তখন আগুন দেখেননি। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হওয়ার পর আগুন দৃশ্যমান হয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে তেজগাঁও রেলস্টেশনে ট্রেনে আগুনের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে সংস্থার তিনটি ইউনিট গিয়ে আগুন নির্বাপণ করে। এ সময় এক মা ও শিশুসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার হয়।