দুধ খেতে অনেকেই ভালবাসেন না! অথচ সুস্বাস্থ্য পেতে রোজের খাদ্যতালিকায় দুধ রাখতেই হবে। দুধের স্বাদ বাড়াতে তার মধ্যে দু’টো খেজুর মিশিয়ে খেলে মন্দ লাগে না। তবে কেবল স্বাদ বাড়াতেই নয়, এই পানীয় পুষ্টিগুণেও ভরপুর। দুধের বহু উপকারিতা রয়েছে। খেজুরও কোনো অংশে কম নয়। স্বাভাবিকভাবেই গরম দুধে খেজুর মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। কেউ সকালের নাস্তায় খেজুর খান। আবার রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কারও এক কাপ দুধ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে দুর্বল দৃষ্টিশক্তি— একাধিক রোগ-ব্যাধি দূর করতে এই পানীয়টির কোনও জুড়ি নেই। গ্রীষ্মকালে খুব বেশি শুকনো ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন না পুষ্টিবিদরা। তবে জলে বা দুধে ভিজিয়ে রাখলে গরমের দিনেও খেজুর খেলে শরীরের ক্ষতি হবে না।
খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা বিভিন্ন রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মন ফুরফুরা রাখতেও দারুণ কার্যকরী দুধ-খেজুর। একসঙ্গে খেলে যে যে উপকারিতা পাওয়া যাবে-
রক্তাল্পতা নিরাময় করে: দুধ ও খেজুর, উভয়ই আয়রনের ভাল উত্স। প্রতি দিন সকালে, খালি পেটে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে দুধ এবং খেজুর একসঙ্গে খেতে পারলে রক্তাল্পতার সমস্যা কয়েক দিনের মধ্যেই দূর হবে।
শরীরের দুর্বলতা দূর করে: গ্রীষ্মের দিনে আমরা অল্প কাজ করেই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। সারা দিন শরীর চাঙ্গা রাখতে এই পানীয় দারুণ উপকারী। সকালে অফিস যাওয়ার তাড়াহুড়োয় অনেকেই প্রাতরাশ না করেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এক গ্লাস দুধের মধ্যে তিন-চারটে খেজুর মিশিয়ে খেলে অনেক ক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। গ্লুকোজ এবং ফ্রুকটোজে ভরপুর খেজুর শরীরে শক্তির জোগান দেয়।
ত্বকে বয়েয়ের ছাপ আসতে দেয় না: খেজুর ও দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা ত্বকের বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলি দূরে ঠেলে দেয়। চুলকানি বা প্রদাহ দূর করতেও এই পানীয় বেশ উপকারী। ঈষদুষ্ণ গরম দুধে চারটি খেজুর মিশিয়ে খেলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বেড়ে যায়। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এই পানীয় রাখলে ব্রণ, ফুসকুড়ির সমস্যাও দূর হয়। যাঁদের অতিরিক্ত চুল পড়ছে তাঁরাও এই পানীয় খেতে পারেন।
হজমের সমস্যায় দারুণ উপকারী: গরমকালে এমনিতেই কোনও ভারী খাবার খেলে হজমের সমস্যা হয়। অল্প খেলেই পেট ভার হয়ে থাকে, গ্যাসের সমস্যা হয়। এই সমস্যা দুর করতে দুধ আর খেজুরের মিশ্রণ বেশ উপকারী। খেজুরে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার থাকে, তা হজম প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে।
গাঁটের ব্যথা নিরাময় করে: দুধ ক্যালশিয়ামের খুব ভাল উত্স। দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে হাড় মজবুত হয়। গাঁটের ব্যথার সমস্যা থাকলেও এই পানীয় খেলে সুফল মিলবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে দুধ-খেজুর। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ কার্যকরী। এজন্য অনেকে দুধে ভেজানো খেজুর খান। এছাড়া হাড় শক্তিশালী করে দুধ-খেজুর। মাংসপেশী তৈরি করতেও দারুণ ভূমিকা রাখে এটি।
চোখের সমস্যা দূর: অল্প বয়সে অনেকেই চোখে ঝাপসা দেখেন। বয়স হলে চোখে ছানি পড়ে অনেকের। তাই দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ রাখতে খেজুর-দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চোখে অঞ্জনির সমস্যায়, যারা একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন, তাদেরও তা খেতে বলছেন তারা।