মেছতার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। ত্বকের এক দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হলো মেছতা। একবার মেছতার দাগ পড়লে ত্বকের সৌন্দর্য পুরোটাই নষ্ট হয়ে যায়। মুখে মেছতার দাগ অনেকেরই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কীভাবে এই দাগ দূর করা যায়, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন সবাই। একই সঙ্গে বিভিন্নজনের পরামর্শে কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে মেছতার দাগ আরও গাঢ় হয় ত্বকে। একবার মুখে মেছদার দাগ পড়লে তা যেন সব সৌন্দর্যই নষ্ট করে দেয়।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকরই মেসতা (melasma) দেখা দেয়। কপালে, গালে বা নাকের উপর নরমাল স্কিনটোনের থেকে একটু গাঢ় ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়, এটাকেই মেসতা বা মেলাসমা বলে।জিনগত কারণেই বেশিরভাগ মানুষের ত্বকে পড়ে মেছতার দাগ। পরিবারের কারো থাকলে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে মেছতা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অন্যদিকে নারীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ খাওয়ার কারণেও মেছতা পড়ে থাকে। এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় অধিকাংশ নারীর মুখে মেছতা পড়তে দেখা যায়।
এমনকি নারী মেনোপোজের সময় হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেওয়ার ফলেও মুখে পড়তে পারে মেছতার দাগ। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো, সানস্ক্রিন ব্যাতীত সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসা। ত্বকের লেয়ার অনুযায়ী মেছতা দু’ধরনের হতে পারে। ত্বকের ওপরের লেয়ারে যদি হয়ে থাকে; তাহলে এটি অ্যাপিডার্মাল মেলাজমা। আর ডার্মাল লেয়ারে যদি হয়ে থাকে, তাহলে একে ডার্মাল মেলাজমা বলা হয়।
মেছতা একবার হলে তা একেবারে দূর করা সম্ভব নয়। তবে ধীরে ধীরে এর দাগ হালকা করা যায়। এজন্য বাজারের প্রসাধনী বাদ দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে করুন এর সমাধান।
হলুদ: সবার রান্নাঘরেই হলুদ থাকে। এই উপাদানটি সবাই রান্নায় ব্যবহার করেন। এমনকি রূপচর্চাতেও যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে হলুদ। হলুদে থাকা কার্কিউমিন ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
কার্কিউমিনে ইউভি প্রতিরক্ষামূলক গুণাবলী থাকে। এর একটি হলো, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অন্যটি অ্যান্টি-মুটাগেন। এ দুটি উপাদানই ত্বকের সব ধরনের প্রদাহ কমায়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, টাইরোসিনেজ ও মেলানিন উৎপাদনে বাঁধা দেয় কার্কুমিন। এরা উভয়ই মেছতার দাগের জন্য দায়ী। অন্য আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, কার্কুমিনে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো ত্বকের যে কোনো কালচে দাগ দূর করতে পারে।
লেবুর রস: লেবুও সবার ঘরেই থাকে। এক লেবুয় থাকে নানা উপকারিতা। এর রসে প্রাকৃতিক ব্লিচিং অ্যাজেন্ট থাকে। ত্বকের যে কোনো কালচে দাগ হালকা করে দিতে পারে লেবু। তবে লেবুর রস কখনো সরাসরি মুখে ব্যবহার করবেন না। এর সঙ্গে যে কোনো ফেস মাস্ক ব্যবহার করুন। এ ছাড়াও হলুদের গুঁড়োর সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।
মেছতা প্রতিকারের এসব ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি। যেমন- ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় কোনো খাবার খাবেন না। যারা নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাচ্ছেন, তারা এখনই বন্ধ করুন। আর অবশ্যই রোদে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করুন।