ওজন কমানোর যুগে মোটা হতে চান হাতেগোনা কয়েকজন। অতিরিক্ত ওজন যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম হলে সেটিও শঙ্কার কারণ হতে পারে। সুষম খাদ্যাভ্যাস মানা ও নিয়মিত ব্যায়াম করা ওজন বাড়ানোর জন্য আবশ্যক। এখানে ওজন বাড়ে কোন খাবারে, ওজন বৃদ্ধির ব্যায়ামগুলো কি এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য কোন বিষয়গুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে — তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রোটিন বেশি খান: মোটা হতে চাইলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। রোগা হওয়ার পর্বে প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে ওজন বৃদ্ধি করতে প্রোটিন খেতে হবে অনেকটা বেশি পরিমাণে।
১.) মাছ, মাংস ১ পিসের পরিবর্তে ২ বা ৩ পিস খেতে হবে।
২.) ডাল ভাতের সঙ্গে ছাড়াও স্যুপ হিসাবে খাওয়া যেতে পারে। ডালের সঙ্গে সবজি মিশিয়ে স্যুপ করে নাস্তা হিসাবে খেতে পারেন।
৩.) শিমের বিচি, কুমড়ার বিচি, সূর্যমুখীর বিচি অর্থাৎ মিক্সড সিড খেতে পারেন।
৪.) প্রতিদিন ২ টি করে ডিম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
ঘন ঘন খেতে হবে: বেশি খাবার খাওয়ার মানে একসঙ্গে অনেক কিছু খেয়ে নেওয়া নয়। বারে বারে খান। সারা দিনে অন্তত ৬ বার অল্প অল্প করে খান। এর ফলে বেশি ক্যালোরি যাবে শরীরে। ওজনও বাড়বে ধীরে ধীরে।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খান: রোগা হতে চাইলে ফ্যাট খাওয়া বন্ধ করতে হয়। কিন্ত মোটা হতে চাইলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খান বেশি করে। যেমন-
১.) বাদাম ভালো ফ্যাটের উৎস। কাজুবাদামে বেশি পরিমাণে ফ্যাট থাকে। ওজন বাড়ানোর জন্য কাজুবাদাম উপকারী।
২.) অলিভ ওয়েল, নারকেল তেল, ঘি ইত্যাদি যোগ করে খাবারের ক্যালরি বাড়ানো যায়। যেমন- ভাত খাওয়া সময় একটু ঘি যোগ করা,সালাদের সঙ্গে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল বা কোকোনাট ওয়েল যোগ করে খেলে ক্যালরি ভ্যালু অনেক বেড়ে যায়।
৩.) ননীযুক্ত পনির খাওয়া যেতে পারে। এটির ক্যালরি ভ্যালু অনেক।
পর্যাপ্ত ঘুম: শুধু খেলেই হবে না, মোটা হওয়ার জন্য ঘুমোতেও হবে ঠিকঠাক। পর্যাপ্ত ঘুমোলে শরীরের নানা ক্রিয়াকলাপ ঠিক থাকে। খিদে হবে। বিভিন্ন ধরনের হরমোন ক্ষরণেও কোনও বিঘ্ন ঘটবে না। সারা দিনে অন্তত ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে।
শর্করা: মোটা হওয়ার জন্য শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ারও দরকার আছে।
- ভাতের মাড় খাওয়ার পাশাপাশি বসা ভাত খেতে পারলে ওজন বাড়বে।
- পান্তাভাত প্রো-বায়োটিকের খুব ভালো উৎস। সকালের নাস্তায় পান্তাভাত খাওয়া যেতে পারে। এটি হজমেও সহায়তা করে।
- আলু বেশি পরিমাণে খেতে হবে। ভাতের সঙ্গে আলু ভর্তা, আলু ভাজি বা যেকোনো তরকারিতে আলু যোগ করে খেতে পারেন।
ব্যায়াম: পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি হালকা ব্যায়ামও করতে হবে। দিনে অন্তত ২০-৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে ।
যাদের বিএমআই ১৮ এর থেকে একটু কম তারা এরকম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন। তবে যাদের ওজন অনেক কম সেক্ষেত্রে অবশ্যই পেশাদার পুষ্টিবিদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে।