সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম। অনন্য সৌন্দর্যের সঙ্গে ভুবন ভোলানো আবেদনময় মিষ্টিহাসি আর অসাধারণ অভিনয়শৈলীর কারণে চিরকালীন বাঙালি সুচিত্রা সেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মন জয় করেছেন। আজ ১৭ জানুয়ারি মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের দশম প্রয়াণ দিবস।
১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের বৃহত্তর পাবনার সিরাজগঞ্জ মহকুমার ভাঙাবাড়ি গ্রামে নানাবাড়িতে তার জন্ম। পাবনা শহরের বাড়িতে কেটেছে তার শৈশব-কৈশোর। সুচিত্রা সেনের প্রকৃত নাম রমা দাশগুপ্ত। তবে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগে পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় চলে যান তিনি।
১৯৫২ সালে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন। প্রথম ছবি করেন ‘শেষ কোথায়’। তবে ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি করে সাড়া ফেলে দেন চলচ্চিত্রাঙ্গনে। সুচিত্রা সেন বাংলার পাশাপাশি হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি দেবদাস (১৯৫৫)।
যার অনবদ্য অভিনয় এবং অপরূপ সৌন্দর্য আজও দাগ কেটে আছে কোটি দর্শকের হৃদয়ে। অভিনয়গুণে যিনি হয়ে উঠেছিলেন দুই বাংলার চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষের কাছে মহানায়িকা। তিনি মূলত বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রে উত্তম কুমারের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
সুচিত্রা সেন ১৯৭৮ সালে প্রণয় পাশা ছবি করার পর লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। এরপর থেকে তিনি আর জনসমক্ষে আসেননি। মাঝে একবার ভোটার পরিচয়পত্রে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ছবি তুলতে ভোটকেন্দ্রে যান। সুচিত্রা সেন ছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ভক্ত।
দীর্ঘদিন অন্তরীণ থাকায় সুচিত্রা সেনের শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছিল। কিন্তু কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেননি। হঠাৎ নিজের লাগাম টেনে ধরেন এই চিরআবেদনময়ী সৌন্দর্যের প্রতীক। প্রয়াণের আগে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি একটি হাসপাতাল বেলভিউতে ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান মহানায়িকা সুচিত্রা সেন।