চুলের যত্নে প্লাস্টিকের চিরুনিকে উপকার আর গুণে ছাপিয়ে যায় বাঁশের চিরুনি কিম্বা কাঠের চিরুনি। যদি চুল আঁচড়ানোর জন্য কাঠের চিরুনি ব্যবহার করেন, তাহলে তার উপকারিতাও চোখে পড়বে। দেখে নেওয়া যাক, কেন কাঠের চিরুনিকে চুলের যত্নে সবচেয়ে কার্যকরি মনে করা হয়।
১. চুলের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে: আমরা জেনেছি যে কাঠের চিরুনি স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে হেয়ার ফলিকলগুলো স্টিমুলেট হয়। যখন স্ক্যাল্প পর্যাপ্ত ব্লাড সাপ্লাই পায় তখন স্বাভাবিকভাবেই সব ধরনের নিউট্রিয়েন্ট এর বেনিফিটস পাওয়া যায়। আর পুষ্টি পেলে চুল তো দ্রুত বেড়ে উঠবেই!
২. আয়রণের সমতা রক্ষা করে: আমাদের চুল মূলত কার্বনের যৌগ, এটি আমাদের শরীরের অন্যান্য অংশের মতো কার্বন দিয়ে গঠিত। প্লাস্টিক বা মেটালের চিরুনিতে সাধারণত ধনাত্মক আয়ন থাকে, যখন চুল আচড়ানোর সময় স্ক্যাল্পে ফ্রিকশন হয় তখন এই ধনাত্নক আয়নগুলো আমাদের চুলকে ফ্রিজি ও ড্রাই করে দেয়। কিন্তু কাঠের চিরুনিতে এই ঝামেলা নেই, কারণ কাঠ নিজেই তো ফাইবার যেটা কিনা কার্বন দিয়ে তৈরি। তাই কাঠের চিরুনি দিয়ে আচড়ানোর সময় চুলে আয়ন কাউন্ট নিউট্রাল থাকে এবং ফ্রিজিনেস কন্ট্রোল হয়।
৩. গ্রিজিনেস কমায়: কাঠের চিরুনির গঠনের জন্য এটি পুরো স্ক্যাল্পে সমানভাবে প্রেশার ডিস্ট্রিবিউট করে দেয়, ফলে সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোলে থাকে। সেবাম হলো আমাদের ত্বকের সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত এক ধরনের তেল, যেটাকে আমরা ন্যাচারাল অয়েল বলি। সমান প্রেশার ও জেন্টল ম্যাসাজের কারণে এই সেবাম শুধুমাত্র স্ক্যাল্প নয় বরং চুলের আগা পর্যন্ত খুব ভালোভাবে ডিস্ট্রিবিউশন হয়, এর জন্য স্ক্যাল্পে খুব বেশি গ্রিজিনেস ফিল হয় না।
৪. ব্রেকেজ ও হেয়ার ফল কমায়: কাঠের চিরুনি যে নিউট্রাল আয়নের হয় এটা তো আমরা শুরুতেই জেনেছি। তার সাথে এর ব্রিসলগুলোর মধ্যে বেশ ফাঁকা জায়গা থাকায় যখন চুল আচড়ানো হয়, তখন বেশ মসৃণভাবে চিরুনি চুলের মধ্য দিয়ে গ্লাইড করে। ফলে ব্রেকেজ এর সুযোগ কমে যায় এবং ব্রেকেজ কমলে স্বাভাবিকভাবেই চুল পড়ায় হার কমে যায়।
৫. ড্যানড্রাফ প্রিভেন্ট করে: যখন আমরা প্লাস্টিক বা মেটালের চিরুনি ব্যবহার করি, তখন স্ক্যাল্পে তুলনামূলক বেশি ফ্রিকশন হয়। এতে স্ক্যাল্পে ইরিটেশন হতে পারে। আর এই ইরিটেশন থেকে শুরু হতে পারে খুশকি! কিন্তু যখন কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা হয় তখন ইরিটেশন অনেকটাই কমে আসে।
৬. স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়: কাঠের চিরুনির টিপগুলো সাধারণত রাউন্ড হয়ে থাকে, হার্শ হয় না। আমাদের স্ক্যাল্পে বেশ কিছু আকুপ্রেশার পয়েন্ট আছে, তো যখনই আমরা কাঠের চিরুনি দিয়ে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করি তখন এই পয়েন্টগুলোতে প্রেশার পড়ে এবং স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়।