শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল হৃৎপিণ্ড। এই অঙ্গটি ঠিকমতো কাজ করলে সারা শরীরে বিশুদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায়। ফলে রোগভোগের আশঙ্কা কমে। তবে আমাদের কয়েকটি ভুলেই এই অঙ্গে নানা অসুখ দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা কোষের ঝিল্লি বা (সেল মেমব্রেনে)-এ পাওয়া যায় এবং যা সব প্রাণীর রক্তে পরিবাহিত হয়। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেল মেমব্রেনের এটি একটি অত্যাবশ্যক উপাদান। এই উপাদান মেমেব্রেনের মধ্য দিয়ে তরল পদার্থের ভেদ্যতা সচল রাখে এবং তার তারল্য বজায় রাখে। তবে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়। মূলত তেলেভাজা, ফাস্টফুড ও আরও কিছু কিছু খাবার থেকেই কোলেস্টেরল আমাদের শরীরে আসে। কোলেস্টেরল ভালো ও খারাপ দুই ধরনের হয়। হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনকে ভালো কোলেস্টেরল বলা হয়। এই কোলেস্টেরল হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, খারাপ কোলেস্টেরল রক্তনালিতে জমে রক্ত চলাচলের পথ সরু করে দেয়। এতে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায়। কিছু যোগ ব্যায়াম এই কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন মাত্র তিনটি ব্যায়াম করলেই দূর হবে খারাপ কোলেস্টেরল। এছাড়া তাতে হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
চক্রাসন: চক্রাসন করতে প্রথমে পিঠের উপর শুয়ে পড়ুন। এবার দুই পায়ের মাঝে কিছুটা ফাঁক করে কনুই বেঁকিয়ে হাতের তালু মাটিতে রাখুন। এরপর কোমর, পিঠ ও বুক উপরের দিকে তুলুন। এই অবস্থায় দেহের আকৃতি বৃত্তের মতো হয়ে যায়।
শলভাসন: দুই হাত সোজা করে পেট ও উরুর পাশে হাতের তালু দুটি মাটির উপর পাতিয়ে রাখুন। এবার তালুর উপর চাপ দিয়ে দুই পা জোড়া অবস্থায় আস্তে আস্তে উপরের দিকে যতটা সম্ভব তুলুন। পা দুটি হাঁটুর কাছে বেঁকলে হবে না।
সর্বাঙ্গসন: সর্বাঙ্গসন ব্যায়ামে হৃৎপিণ্ড মস্তিষ্কের নিচে থাকে। এর ফলে মাথায় রক্ত প্রবাহ বাড়ে। ফলে শরীরের কর্মক্ষমতাও বেড়ে যায়। এই ব্যায়ামে শরীরের সমস্ত অঙ্গ জড়িয়ে থাকে। তাই একে সর্বাঙ্গসন বলা হয়। তাই শত ব্যস্ততা থাকলেও সুস্থ থাকতে চাইলে শরীরচর্চার জন্য প্রতিদিন একটু সময় বের করতেই হবে।
এরোবিক এক্সারসাইজ: এরোবিক এক্সারসাইজ করলে শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক হয়। এই কারণে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে, হার্ট রেট স্বাভাবিক হয়। এ ছাড়া এরোবিক এক্সারসাইজ আপনার সার্বিক ফিটনেস বাড়ায়। এমনকী হার্টের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রেও এই ধরনের ব্যায়ামের জুড়ি মেলা ভার। তাই ব্রিস্ক ওয়াক, হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটার সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করুন।
স্ট্রেচিং করুন: এই ধরনের এক্সারসাইজ করলে শরীরের নমনীয়তা বাড়ে। ফলে শরীর ও হাড় নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে। স্ট্রেচিং করার মাধ্যমে অন্যান্য ভারী এক্সারসাইজ করতে সুবিধা হয়। তাই নিয়মিত স্ট্রেচিং করুন। এ ছাড়া প্রতিদিন ব্যালেন্সিং এক্সারসাইজও করতে হবে। তবেই হার্ট থাকবে সুস্থ। আপনি প্রাণ খুলে বাঁচতে পারবেন।