২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে প্রায় চার মাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজাতে নির্বিচার বোমা হামলা ও অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ইতিমধ্যে উপত্যকাটিতে প্রায় ১৭ হাজার শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বা একা হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। এরমধ্যে উপত্যকাটির প্রায় সকল শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। গতকাল (শুক্রবার) এমনটাই জানিয়েছে ইউনিসেফ।
সংস্থাটির গাজা অঞ্চলের চিফ কমিউনিকেশন অফিসার জনাথান ক্রিক্স জেরুজালেম থেকে এক মিডিয়া ব্রিফিং এ বলেন, “প্রতিটি শিশুর হারানোর এবং দুঃখের একটি হৃদয়বিদারক গল্প আছে। শিশুদের ১৭ হাজারের এই সংখ্যাটি অঞ্চলটিতে সামগ্রিক বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যার ১ শতাংশ।”
জেরুজালেম থেকে এক ভিডিও বার্তায় ফিলিস্তিনে ইউনিসেফের প্রধান জোনাথন ক্রিকক্স বলেন, “গাজার প্রত্যেকটি শিশুর দুঃখ এবং শোকের হৃদয়বিদারক কাহিনী রয়েছে।” তিনি জানান সঙ্গীবিহীন একাকী শিশুদের এ সংখ্যাটি কেবল অনুমান, কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে আসল তথ্য যাচাই করা প্রায় অসম্ভব। জোনাথন আরও জানান, ‘সঙ্গীহীন শিশুদের পরিবারকে খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ এসব শিশুদের মাঝে আহত বা আতঙ্কিত এমন শিশুও রয়েছে যারা তাদের নাম পর্যন্ত বলতে পারে না।‘
ইউনিসেফ বিচ্ছিন্ন শিশুদের বলতে তাদের বুঝিয়েছে যারা বাবা-মা ছাড়া বা কোন আত্মীয়-স্বজন ছাড়া একাকী রয়েছে।ভিডিওতে জোনাথন বলেন, গাজায় যুদ্ধের কারণে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং উপত্যকাটিতে ১০ লাখ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রয়োজন।
চার মাস ধরে চলমান যুদ্ধের কারণে গাজার শিশুরা উচ্চ মাত্রার উদ্বেগ, ক্ষুধা, ও নিদ্রাহীনতায় ভুগছে। বোমা হামলার শব্দে আতঙ্কিত অবস্থায় দিন-রাত কাটাতে হচ্ছে গাজার শিশুদের।
৭ অক্টোবর কিংবা তারপর থেকে আমরা যে সহিংসতা দেখেছি তা কোনো শিশুর জন্য কখনই কাম্য নয়।” এক্ষেত্রে জনাথান একটি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। যাতে করে ইউনিসেফ পরিবার কিংবা আত্মীয়দের থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুদের সনাক্ত করতে পারে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দিতে পারে।