উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভাষা ও সফট স্কিল শেখার মধ্য দিয়ে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা-যোগ্যতা না থাকলে শুধু গ্র্যাজুয়েশন দিয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।
রবিবার সকালে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সপ্তম সমাবর্তনে যোগ দিয়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে তার প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে অংশ নেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, বিশ্বের যেসব ভাষা বহুল প্রচলিত সেসব ভাষায় আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে করে দক্ষ হয়ে ওঠেন। এসব প্রচলিত ভাষায় আমাদের শিক্ষার্থীরা দক্ষ না হলে কর্মসংস্থানের দিক থেকে পিছিয়ে যাওয়াটা হবে স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, ভাষা ছাড়াও অনেক সফট স্কিল রয়েছে। এসব স্কিলের দিক থেকেও আমরা যদি পিছিয়ে থাকি তাহলে শুধু গ্র্যাজুয়েট হয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা আমাদের পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়াটা একটা বিশ্ব নাগরিক তৈরি করার প্রক্রিয়া। সমগ্র বিশ্বে এখন দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মীর চাহিদা বেড়েছে। সমগ্র বিশ্বের শ্রমবাজার আমাদের জন্য উন্মুক্ত। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে যদি দেখি, সেসব দেশে আরবি-ফরাসি ভাষা শিখে বিশ্ব নাগরিক হওয়ার জন্য তাদের তরুণ প্রজন্ম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
আমাদেরও এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। এ জন্য যেভাবে দক্ষ ও যোগ্য হওয়া যায়, শিক্ষার্থীদের সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। মানসম্পন্ন-দক্ষ কর্মীর অভাবে বিদেশি পেশাজীবীরা এ দেশে এসে শ্রমবাজার দখল করছে বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, পৃথিবীর নানান দেশ থেকে প্রশিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষ পেশাজীবীরা এসে কাজ করছেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কেন বিদেশি পেশাজীবীদের এ জায়গা দখল করতে পারবেন না? যাঁরা ইতিমধ্যেই গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশে বিনীত নিবেদন থাকবে ক্যারিয়ার প্ল্যানিংটা আপনারা অবশ্যই করবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের যেসব ভাষা বহুল প্রচলিত, সেসব ভাষায় আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষ হয়ে ওঠে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ভাষা ছাড়াও অনেক সফট স্কিল রয়েছে। এসব স্কিলের দিক থেকেও আমরা যদি পিছিয়ে থাকি, তাহলে শুধু গ্র্যাজুয়েট হয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা আমাদের পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে যাবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যেসব খাতে বিদেশি পেশাজীবীরা কর্মরত আছেন, সেসব খাতে আপনারা দেখবেন, এসব পেশাজীবীরা সুনির্দিষ্ট কিছু দক্ষতার কারণে এ দেশে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। যাঁরা কর্মদাতা, তাঁরা কিন্তু শুধু গ্র্যাজুয়েট বলে কাউকে চাকরি দেন না।’
ইউআইইউর সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইমেরিটাস এবং পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা এবং ইউআইইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া।